শহীদজননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন এলকপের সভাপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমানছবি: সংগৃহীত

আজ ২৬ জুন শহীদজননী জাহানারা ইমামের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন শহীদজননীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নিজ নিজ কর্মসূচির আয়োজন করে।

নির্মূল কমিটির স্মারক বক্তৃতা ও পদক প্রদান

শহীদজননীর মৃত্যুবার্ষিকীতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা’ ও ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আজ বিকেলে ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’ শীর্ষক স্মারক বক্তব্যের নির্ধারিত বক্তা ছিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তবে জরুরি কাজে ঢাকার বাইরে থাকায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্মূল কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাপস কান্তি বল।

সূচনা বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি লেখক, সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। সভাপতিত্ব করেন নির্মূল কমিটির সভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম, এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপলের (এলকপ) সভাপতি অধ্যাপক মিজানুর রহমান ও নির্মূল কমিটির সহসভাপতি এম সাঈদ আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীর।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতিবছরের মতো এ বছরও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ প্রদান করা হয়। এ বছর ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশের মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের নেতা বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম এবং সংগঠন হিসেবে এলকপকে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান করা হয়।

বাসদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ও সভা

মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শহীদজননী জাহানারা ইমামের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাসদ
ছবি: সংগৃহীত

শহীদজননীর মৃত্যুবার্ষিকীতে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সকালে তাঁর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

এরপর দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বলেন, শহীদজননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক। বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলেও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেনি। যার ফলে আজও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কথিত ধর্ম অবমাননার নামে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। বজলুর রশীদ ফিরোজ ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানান।