আশিয়ান সিটির ৩৩ একর জায়গায় কার্যক্রম চালানোর রায় বহাল
আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড রাজধানীর উত্তরা ও বিমানবন্দরসংলগ্ন ৩৩ একর জায়গায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে পারবে বলে দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা পৃথক আবেদন (রিভিউ) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ওই প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক আপিল নিষ্পত্তি করে গত বছরের ২২ নভেম্বর রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ে বলা হয়, আশিয়ান ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড ৩৩ একর ভূমিতে তাদের প্রকল্পের কার্যক্রম চালানোর অধিকারী।
এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রিট আবেদনকারীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ চলতি বছর পৃথক আবেদন (রিভিউ) করে। শুনানি নিয়ে পৃথক আবেদন খারিজ করে আজ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীপক্ষে (রিভিউ আবেদনকারী) শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এস হাসানুল বান্না।
আশিয়ান সিটির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী ও আহসানুল করিম। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী ও মো. হোসনে মোবারক।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ।
আশিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষের অন্যতম আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, রিট আবেদনকারীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে আপিল বিভাগের আগের রায় বহাল রইল। ৩৩ একর ভূমিতে আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম চালাতে বাধা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে প্রকল্প সম্প্রসারণ করা যাবে বলে মনে করেন এই আইনজীবী।
এর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন ছাড়া ২০০৬ সালে উত্তরার দক্ষিণখান এলাকায় আশিয়ান সিটি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে—এমন দাবি করে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) আটটি সংগঠন ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে।
চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে প্রকল্প অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে আশিয়ান সিটি কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট রিভিউ মঞ্জুর করে প্রকল্প অবৈধ ঘোষণার রায় বাতিল করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। আপিল বিভাগ ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেওয়া রিভিউয়ের রায় স্থগিত করেন। এ ছাড়া আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আশিয়ান সিটি প্রকল্পের সব ধরনের কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালে পৃথক আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ। আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত বছরের ২২ নভেম্বর আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে রায় দেওয়া হয়। এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা পৃথক আবেদন আজ খারিজ হলো।