৪০০ নমুনা সংগ্রহের পর এবার তিনিও আক্রান্ত
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকেই নমুনা সংগ্রহে নিরলস শ্রম দিয়ে আসছিলেন ভাসান চন্দ্র কীর্তনীয়া (৪০)। সন্দেহভাজন কোভিড–১৯ রোগীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিনে–রাতে নমুনা সংগ্রহ করেছেন তিনি। গত এপ্রিল থেকে তিনি একা প্রায় ৪০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন।
ভাসান চন্দ্র কীর্তনীয়া কয়েক দিন ধরে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন। পরীক্ষার জন্য নিজের নমুনা নিজেই সংগ্রহ করেন তিনি। বুধবার পাওয়া ওই নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পজিটিভ এসেছে। ভাসান চন্দ্র কীর্তনীয়া চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। তাঁর বাড়ি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে। গত ১৮ মে প্রথম আলোয় তাঁকে নিয়ে ‘মানুষকে ভালোবেসে করোনা জয়ের লড়াইয়ে নেমেছি’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুসরাত জাহান তাঁর (ভাসান) কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নুসরাত জাহান বলেন, ওই টেকনোলজিস্ট সত্যিকারের একজন করোনাযোদ্ধা। কিছুটা অসুস্থবোধ করলে এবং উপসর্গ দেখা দিলে গত সোমবার তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। গত বুধবার সেখানকার পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁর শরীরে কোভিড-১৯–এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
নুসরাত জাহান বলেন, তাঁকে নিজ বাসায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বাসাটি লকডাউন করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের সদস্যদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ভাসান চন্দ্র বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) পরিধান করেই নমুনা সংগ্রহের কাজ করে আসছিলাম। গত এপ্রিল থেকে হাসপাতালে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে একাই প্রায় ৪০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করেছি। এত সতর্কতার পরও শেষমেশ আমি নিজেই কোভিডে সংক্রমিত হলাম। আমার শরীরে অন্যান্য জটিলতাও রয়েছে। তবু হাল ছাড়ব না। করোনাকে জয় করে পুনরায় কাজে যোগ দিয়ে মানুষের সেবা দিয়ে যাব। বাকিটুকু তাঁর ইচ্ছা।’