সংঘাত, শঙ্কা আর নানা অভিযোগে মধ্য দিয়ে ৩১টি পৌরসভায় আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮টিতেই জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ।
পঞ্চম ধাপের ইশতেহার অনুযায়ী ২৯টি পৌরসভার নির্বাচন হয়েছে। আর শরীয়তপুরের ডামুড্যা ও নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার স্থগিত হওয়া নির্বাচনও আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজও সৈয়দপুরে নির্বাচনী সংঘাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নানা শঙ্কা আর অভিযোগের মধ্যেই ৩১টি পৌরসভায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৩১টির মধ্যে ২৮টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন। দুটিতে জিতেছেন স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থীরা। তাঁরা হলেন শরীয়তপুরের ডামুড্যায় রেজাউল করিম রাজা ছৈয়াল এবং রংপুরের হারাগাছে এরশাদুল হক। বগুড়া পৌরসভায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন বিএনপির প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশা। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৮২ হাজার ২১৭ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) আবদুল মান্নান আকন্দ পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৯০ ভোট।
আওয়ামী লীগের জয় পাওয়া ২৮টি পৌরসভার মধ্যে মাদারীপুরের শিবচর, চট্টগ্রামের মীরসরাই ও রাউজান পৌরসভায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় আগেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। রাউজান পৌরসভায় সব কাউন্সিলরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের বিজয়ীরা
পৌরসভাগুলোতে আওয়ামী লীগের যে প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন, তাঁরা হলেন চট্টগ্রামের বারইয়ারহাটে মোহাম্মদ রেজাউল করিম, রাঙ্গুনিয়ায় শাহজাহান সিকদার, জামালপুর সদরে মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন, মাদারগঞ্জে মির্জা গোলাম কিবরিয়া ও ইসলামপুরে আবদুল কাদের সেখ।
রাজশাহীর চারঘাটে জিতেছেন একরামুল হক, দুর্গাপুরে তোফাজ্জাল হোসেন, চাঁদপুরের মতলবে আওলাদ হোসেন, শহরাস্তিতে হাজি আবদুল লতিফ।
ভোলা পৌরসভার মেয়র হয়েছেন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আর চরফ্যাশনে মো. মোর্শেদ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জিতেছেন আশরাফুল আলম আর মহেশপুরে আবদুর রশিদ খান।
যশোরের কেশবপুরে জিতেছেন রফিকুল ইসলাম, মাদারীপুর সদরে খালিদ হোসেন ইয়াদ এবং লক্ষ্মীপুরের রায়পুর গিয়াস উদ্দিন রুভেল ভাট।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে আবদুর রশিদ খান, হবিগঞ্জ সদরে আতাউর রহমান, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে আবু নাঈম মো. বাশার, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইফতেখার হোসেন জয়লাভ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে নায়ার কবির, জয়পুরহাটে মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোস্তাক, ময়মনসিংহের নান্দাইলে রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, গাজীপুরের কালীগঞ্জে এস এম রবীন হোসেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাফিকা আকতার জাহান বেবী নির্বাচিত হয়েছেন।
বিপুল ব্যবধান
যে ২৮টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জিতেছেন, সেগুলোর বেশির ভাগেই ভোটের ব্যবধান ছিল বিপুল। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র শাহজাহান সিকদার ১৪ হাজার ৮০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী হেলাল উদ্দিন শাহ পেয়েছেন মোটে ২২১ ভোট। ভোলার চরফ্যাশন পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মোরশেদ ১৪ হাজার ৯১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির হুমায়ুন কবির (কবির সিকদার) পেয়েছেন ৭৪৬ ভোট।
নাইদহের মহেশপুর পৌরসভায় নৌকা প্রতীকের আবদুর রশিদ খান পেয়েছেন ১৩ হাবার ৫৯৮ ভোট, আর ধানের শীষের আমিরুল ইসলাম খান পেয়েছেন ১ হাজার ৫৫ ভোট।
নরসিংদীর চার কেন্দ্রে ভোট
চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত নরসিংদী পৌরসভার নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত হওয়া চারটি কেন্দ্রে আজ ভোট গ্রহণ হয়েছে। ওই চার কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল ধরে ওই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমজাদ হোসেন বাচ্চুকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি পেয়েছেন ২১ হাজার ৭৬৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম কাইয়ুম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৬৪ ভোট।
(প্রতিবেদন তৈরিতে অংশ নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা।)