হাওরে নববধূকে ধর্ষণের ঘটনায় আসামির স্বীকারোক্তি, ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় হাওরে নববধূকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিন আসামির মধ্যে মিঠু মিয়া নামের একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে এই জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এদিকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার এক ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্য দুই আসামির নাম সোলায়মান রনি ও শুভ মিয়া। সোলায়মান লাখাই উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এ ঘটনায় শনিবার হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ জরুরি সভা করে সোলায়মানকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, মিঠু মিয়া পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন। তাই শুক্রবার বিকেলে তাঁকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে মিঠু মিয়া এ অপরাধের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবাবন্দি দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর জবানবন্দি অনুযায়ী পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও আরজি সূত্রে জানা যায়, লাখাই উপজেলার এক তরুণ এক মাস আগে নিজ গ্রামের এক তরুণীকে বিয়ে করেন।
গত ২৫ আগস্ট সকালে নববধূ ও এক বন্ধুকে নিয়ে তিনি উপজেলার টিক্কা হাওরে নৌকাভ্রমণে বের হন। তাঁদের নৌকাটি হাওরে পৌঁছার পর পূর্বপরিচিত ব্যক্তিদের ৮ সদস্যের একটি দল তাঁদের নৌকাটি ঘিরে ফেলে। পরে তারা নৌকাটিকে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর ওই তরুণ ও তাঁর বন্ধুকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। পরে দলের সদস্যরা একে একে নববধূকে ধর্ষণ করেন। পাশাপাশি ধর্ষণের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করা হয়। এরপর নববধূ ও তাঁর স্বামীকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়া হবে। এই হুমকির ভয়ে ওই তরুণ ঘটনার পরপর মামলা করেননি। বিষয়টি তিনি গোপন রাখেন।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার ধর্ষণের শিকার নববধূর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই তরুণ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করেন। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলা করেন। এ মামলায় মুছা মিয়া (২৬), মিঠু মিয়া (২১), হৃদয় মিয়া (২২), সুজাত মিয়া (২৩), জুয়েল মিয়া (২৫), সোলায়মান (২২), মুছা মিয়া (২০) ও শুভ মিয়াকে (১৯) আসামি করা হয়।