রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সিট–বাণিজ্যের প্রতিকার চেয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো। এই দাবিতে আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার শের-ই-বাংলা হল থেকে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের হল শাখার সভাপতি জোরপূর্বক বের করে দেন। এ ছাড়া এর আগে মতিহার হলের একজন বাক্প্রতিবন্ধী আবাসিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। পত্রপত্রিকার মাধ্যমে বিভিন্ন হলে সিট–বাণিজ্য, হলে দখলদারি ও শিক্ষার্থী নিপীড়নের খবর পাওয়া যায়। যার সঙ্গে স্পষ্টভাবে ছাত্রলীগ জড়িত। ভুক্তভোগী ও বিভিন্ন সংগঠন বিষয়গুলো নিয়ে প্রশাসনকে অভিহিত করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বরং নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে পরোক্ষভাবে ছাত্রলীগকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ও উন্মুক্ত জ্ঞানচর্চার পরিবেশকে বাধা দিচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি রেখেছে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো। দাবিগুলো হলো আবাসিক হলে সিট–বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, যাঁরা সিট–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে। অনলাইনে প্রতিটি হলের সিটের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। হলের ডাইনিংয়ে খাবারের দাম কমিয়ে ভর্তুকি দিয়ে খাবারের মান বাড়াতে হবে এবং ক্যাম্পাসে খাবারের দাম ও মান মনিটরিং করতে হবে। গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস নিশ্চিতে অবিলম্বে রাকসু নির্বাচন দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর আহ্বায়ক রনজু হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আজকে তাঁদের একটি বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল বেলা সাড়ে ১১টায়। কিন্তু ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন থাকায় তাঁদের কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়েছে। পরে এ নিয়ে তাঁরা ধারাবাহিক কর্মসূচি দেবেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে সিট পেতে হল প্রশাসনের অনুমতির পাশাপাশি ছাত্রলীগের সম্মতিও লাগে। ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সম্মতি ছাড়া শিক্ষার্থীরা হলের সিট পান না বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার এক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেন ছাত্রলীগের এক নেতা। দিনভর হলের বাইরে কাটানোর পর সন্ধ্যায় ওই ছাত্র হলে উঠতে পেরেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবাসিক হলে সিট বরাদ্দ পেয়ে প্রতি মাসে টাকা গুনছেন ঠিকই, কিন্তু সিট পাচ্ছেন না। উল্টো মেসভাড়া দিচ্ছেন। হল প্রাধ্যক্ষকে বললে তাঁরা ‘বড় ভাইদের’ (ছাত্রলীগ নেতা) ধরে হলে ওঠার পরামর্শ দেন। এ নিয়ে প্রথম আলোয় আজ বুধবার ‘প্রাধ্যক্ষরাও অসহায় ছাত্রলীগের কাছে’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।