স্মৃতিসৌধ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ
টাঙ্গাইলের সখীপুরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণে নিম্নমাণের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। আজ সোমবার স্থানীয় সাংসদ (টাঙ্গাইল-৮) বীর মুক্তিযোদ্ধা জোয়াহেরুল ইসলামের কাছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে তাঁরা এ অভিযোগ করেন। নির্মিত স্মৃতিসৌধটি হস্তান্তরের আগেই দেয়াল ফেটে যাওয়ায় ঠিকাদারের বিল আটকে দিয়েছে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর সদর দপ্তর স্থাপন করা হয় সখীপুরের মহানন্দপুর বাজারে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে ওই স্থানে ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়। আল আরাফাত অ্যাসোসিয়েট নামের একটি ঠিকাদারি সংস্থা কাজটি পায়। কার্যাদেশ অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২১ সালের ৩০ জুন আবার সময় বাড়িয়ে নেন ঠিকাদার। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীন হলেও কাজটি দেখভালের দায়িত্ব পায় এলজিইডি।
আজ উপজেলার নলুয়া এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একটি কার্যালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ জোয়াহেরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই স্মৃতিসৌধ নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ওসমান গণি অভিযোগ করেন, কাজ পাওয়া ঠিকাদারের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে। সখীপুরের উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে কাজটি কিনে নেন। ফলে ঠিকাদার অপেশাদার হওয়ায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণকাজটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করায় দেয়াল ও মেঝে ফেটে যায়। পরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফেটে যাওয়া স্থানে পুনরায় সংস্কার করে আবার রং করা হয়।
মহানন্দপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ বলেন, আসল ঠিকাদারকে পাঁচ লাখ টাকা লাভ দিয়ে শাহজাহান মাস্টার কাজটি কিনে তিনিও পাঁচ লাখ টাকা লাভ করার চিন্তা করায় কাজটি নিম্নমানের হয়েছে। ফলে হস্তান্তরের আগেই দেয়াল ও মেঝে ফেটে যায়।
সখীপুরের উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজাহান কাজটি কিনে করার সত্যতা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, সামান্য ফেটেছিল, সেখানে আবার সংস্কার করা হয়েছে। কাজটি খুবই ভালো হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হাসান ইবনে মিজান প্রথম আলোকে বলেন, দেয়াল ফেটে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর চূড়ান্ত বিল আটকে দেওয়া হয়েছে। কাজটি ভালো করে করার পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো অভিযোগ না থাকলে পরে বিল দেওয়া হবে।