‘লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে একে অপরের দুই হাত শক্ত করে ধরে রাখি। স্ত্রীকে প্রাণে বাঁচাতে শত চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হলো না।’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আবু তাহের (৫২)। তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ কাজী ফজলুল হক উইমেন্স কলেজের যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর মাহমুদনগর কলাবাগান এলাকায় রূপসী-৯ নামের কার্গোর ধাক্কায় ডুবে যাওয়া এমএল আশরাফউদ্দিন নামের লঞ্চের যাত্রী ছিলেন তিনি ও তাঁর স্ত্রী স্কুলশিক্ষক স্ত্রী উম্মে খায়রুন ফাতিমা।
আবু তাহের বলেন, ফাতিমা সোনারগাঁ উপজেলার ৬৬ নম্বর হাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মুন্সীগঞ্জ শহরে অবস্থিত প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) থেকে সনদ সংগ্রহ করার জন্য তাঁরা দুজন রোববার দুপুরে লঞ্চে মুন্সিগঞ্জ শহরে যাচ্ছিলেন। পথে কার্গোর ধাক্কায় লঞ্চটি ডুবে গেলে তিনি সাঁতার কেটে নদীর তীরে উঠে প্রাণে বাঁচলেও তাঁর স্ত্রী উম্মে খায়রুন ফাতিমা পানিতে তলিয়ে যান।
আবু তাহের আরও বলেন, লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার মুহূর্তে একে অপরের দুই হাত শক্ত করে ধরে রাখলেও একপর্যায়ে তাঁর হাত থেকে স্ত্রীর হাত ছুটে যায়। এ সময় তিনি সাঁতার কেটে তীরে ওঠেন। চোখের সামনে স্ত্রী ফাতিমা পানিতে তলিয়ে গেলেও তাঁকে বাঁচাতে কোনো সহায়তা করার সুযোগ পাননি বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
আবু তাহের সোনারগাঁ উপজেলার বারদী ইউনিয়নের নাকাটিভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্ত্রী দুই ছেলে মাহফুজুর রহমান (১৮) ও আরশাদ শাহীনকে (১৪) নিয়ে সোনারগাঁ পৌরসভার হাতকোপা এলাকায় বসবাস করেন।
উম্মে খায়রুন ফাতিমার বোনজামাই সোনারগাঁ উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রোববার রাত ৯টায় বলেন, এখনো উম্মে খায়রুন ফাতিমার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। লাশ খুঁজে পেতে পরিবারের সদস্যরা নদীর তীরে অবস্থান করছেন।