সেন্ট মার্টিনে ধর্মঘট প্রত্যাহার, স্বস্তিতে পর্যটকেরা
পরিবেশ অধিদপ্তরের জারি করা গণবিজ্ঞপ্তিতে সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়াদিয়ায় পর্যটকের যাতায়াত বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের উদ্যোগে তিন দিনের ধর্মঘট ঘোষণা করা হয়েছিল। এই ধর্মঘট প্রত্যাহার করায় নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হওয়াই দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
গত রোববার থেকে ধর্মঘট শুরু হলেও আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কথা বিবেচনার পাশাপাশি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অনুরোধে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমেদ ও সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলম।
নূর আহমেদ ও সৈয়দ আলম বলেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সেন্ট মার্টিনের সার্ভিস বোট, স্পিড-গামবোট ও দোকানপাট ধর্মঘটের আওতায় বন্ধ রাখা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কথা বিবেচনার পাশাপাশি টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের অনুরোধে পর্যটকদের ভোগান্তি কমাতে গতকাল সোমবার রাতে ধর্মঘট আহ্বানকারী সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সার্ভিস বোট, স্পিড-গামবোট ও দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।
গামবোট ও স্পিডবোট মালিক সমিতির টিকিট বিক্রেতা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুদিন পর ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় দ্বীপে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। নৌযান ভাড়া করে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করছেন। পর্যটকদের মনে ফুরফুরে আমেজ লক্ষ করা যাচ্ছে।
ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান বলেন, ‘সেন্ট মার্টিনে বিভিন্ন সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে, তা জানতাম না। দ্বীপে এসে ভোগান্তিতে পড়েছিলাম। তবে শেষ মুহূর্তে ধর্মঘট প্রত্যাহার হওয়ায় ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুরতে পেরে আনন্দ লাগছে। তবে মানুষ দ্বীপে বেড়াতে আসে প্রবালদ্বীপ বলে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে মানুষ দেশের বাইরে যাচ্ছে। আমাদের দেশে এ রকম একটি প্রবালদ্বীপ আছে, সেটির জন্য সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা খুবই প্রয়োজন। রশি টানাটানি না করে দ্বীপের মানুষকেও বাঁচতে হবে এবং পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’
সেন্ট মার্টিন ইউপির চেয়ারম্যান নূর আহমেদ বলেন, ‘দ্বীপকে রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, এই দ্বীপের বাসিন্দারা পর্যটন মৌসুমে চার মাস আয়রোজগার করে প্রতিবছরের সংসারের খরচ জোগান দিয়ে আসছেন। দ্বীপের সাড়ে ১০ হাজার বাসিন্দা ও জীবিকার তাগিদে বাইরে থেকে আসা আরও ৪ হাজারসহ সাড়ে ১৪ হাজার মানুষের বসবাস। এর মধ্যে ছয় হাজারের বেশি মানুষের জীবন–জীবিকা এসব যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে।’
জানতে চাইলে টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। এই নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বস্ত করায় সংগঠনগুলো ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আজ সকাল সাড়ে নয়টার পর থেকে সেন্ট মার্টিনের নৌযান চলাচল ও দোকানপাট খুলে দেওয়া হয়েছে।