নীলফামারীর জলঢাকা
সেতুর অভাবে ভোগান্তি
ঘাট এলাকায় কোনো সেতু না থাকায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে যানবাহন চলাচল করছে।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে দেওনাই নদ। নদে এখন কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও গোড়ালি পর্যন্ত পানি। সে পানি মাড়িয়ে লোকজন চলাচল করছেন। স্থানীয় লোকজন বলেন, দ্বিজেনবাবুর ঘাটে একটি সেতুর জন্য তাঁরা বছরের পর বছর ধরনা দিচ্ছেন। জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে আশ্বাস মিললেও সেতু হচ্ছে না।
ধর্মপাল ইউনিয়নের খেরকাটি বাজার থেকে পশ্চিমে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে দ্বিজেনবাবুর ঘাট। ওই দেড় কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক পাকা। স্থানীয় লোকজন বলেন, নীলফামারী জেলা সদর, ডোমার ও জলঢাকা উপজেলার সংযোগ সড়ক এটি। ওই তিন উপজেলার লাখখানেক মানুষ এই পথে চলাচল করেন। নদীর দুই ধারে রয়েছে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও ফসলি জমি। ঘাট এলাকায় কোনো সেতু না থাকায় ওই পথের চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
বর্ষা মৌসুমে নদীর অন্যপাড়ের জমিতে যেতে কষ্ট হয়। নৌকায় একবার যাওয়া আসা করতে একজনের ১০ টাকা করে খরচ হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট-বড় সবাই পানি মাড়িয়ে চলাচল করছে। তাদের মধ্যে স্কুলের শিক্ষার্থীরাও রয়েছে। পানির মধ্য দিয়ে চলছে মালবোঝাই ভ্যানও। ভ্যানের চালক ও পাইটকাপাড়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই ভ্যানে করে আমি মুড়ি, চিড়া ফেরি করে বিক্রি করি। আজকে ডোমার উপজেলার ধরনীগঞ্জ বাজারে ফেরি করে আসলাম। নদীতে সাঁকো না থাকায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। এখন নদীতে পানি কম থাকায় এই পথে যাওয়া-আসা করছি। ভোট আসলে সবাই আশ্বাস দেয়, এখানে সেতু হবে। ভোট শেষ হলে কারও দেখা পাওয়া যায় না।’
সবুজপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী কমলা বেগম (৫৫) বলেন, নদীর ওই পাশে তাঁদের আবাদি জমি আছে। বর্ষা মৌসুমে জমিতে যেতে খুব কষ্ট হয়। নৌকায় একবার যাওয়া আসা করতে একজনের ১০ টাকা করে খরচ হয়। শুকনা মৌসুমে সাঁকো দিয়ে পারাপার হলেও এ বছর সেই সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে।
১৪০ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে মাটি পরীক্ষা করা হবে।
হাজীপাড়া গ্রামের এরশাদ বিন এমদাদ (৩৫) বলেন, নদীর দুই দিকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা রয়েছে। বর্ষার সময় নদীতে অনেক পানি থাকে। তাই নৌকায় পারাপারে শিশুদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় থাকেন তাঁরা।
নীলফামারী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জলঢাকা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই স্থানটা নীলফামারী-ডোমার ও জলঢাকা উপজেলার সংযোগস্থল। সেখানে সেতু স্থাপনের জন্য তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সেখানে ১৪০ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রধান প্রকৌশলী বরাবর একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ হলে মাটি পরীক্ষা করা হবে।