সুনামগঞ্জে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টি, নামছে পাহাড়ি ঢল
সুনামগঞ্জে তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে নামছে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল। এতে জেলার নদ-নদী ও হাওরে পানি আবার বাড়ছে। এভাবে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢল নামা অব্যাহত থাকলে জেলায় আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট অঞ্চলে কালও (সোমবার) ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সুরমা, কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কোনো কোনো পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে বড় কোনো বন্যার আশঙ্কা নেই। হলেও মাঝারি আকারের বন্যা হতে পারে।
সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, শুক্র, শনি ও রোববার জেলায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে শুক্র ও শনিবার বৃষ্টি হয়েছে ২৮০ মিলিমিটার। আজ রোববার সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৪ মিটার। গতকাল ছিল ৬ দশমিক ৭৮ মিটারে। ২৪ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ সেন্টিমিটার। ষোলঘর পয়েন্টে নদীর পানির বিপৎসীমা ৭ দশমিক ৮০ মিটার।
সুনামগঞ্জে টানা ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে গত ১৪ মে থেকে জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সদর উপজেলায় ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়। এসব উপজেলায় বহু মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। প্লাবিত হয় মানুষের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ক্ষতি হয় বোরো ধান, মাছ ও সড়কের।
এই বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার ভারী বৃষ্টি ও বন্যার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় জেলার বাসিন্দারা। এখনো বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি আছে। সদর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের বাসিন্দা শামসুল আলম বলেন, বাড়িঘর থেকে সবে বন্যার পানি নেমেছে। এখনো সবকিছু স্বাভাবিক হয়নি। এখন আবার পানি বাড়ছে। আবার বন্যা হলে মানুষের সমস্যার শেষ থাকবে না।
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, পৌর এলাকার কয়েকটি নিচু এলাকায় এখনো বন্যার পানি আছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় মানুষজন সবে বাড়িঘরে ফিরেছেন। অনেকেই ঘরবাড়ি সংস্কার করতে পারেননি। এখন আবার বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল নামলে প্রথমে আঘাত হানে জেলার সীমান্তবর্তী তাহিরপুর উপজেলায়। এ উপজেলার উজানেই ভারতের মেঘালয় পাহাড়। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বলেন, হাওর-নদী এমনিতেই পানিতে টইটম্বুর। এখন আবার বৃষ্টি হচ্ছে, পানি বাড়ছে। আবার বন্যা হলে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।