২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সিলেটে বিএনপি নেতাকে জুতাপেটা করার ভিডিও ভাইরাল

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে (বামে) জুতাপেটা করছেন সুহেল আহমদ চৌধুরী (ডানে)। গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে
ছবি : ভিডিও থেকে নেওয়া

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে জুতাপেটা করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী এ জুতাপেটা করেন।

শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সারা দিন উপজেলায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ওই ভিডিও।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সুহেল আহমদ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লিলু মিয়ার উদ্দেশে বলছেন, ‘সেক্রেটারি আমি বানিয়েছি। কিগু (কারা) তোরে চিনত? আমার লগে তুই বিরোধিতা করস!’ এরপর সুহেল কিছু অশ্লীল গালিগালাজ করে নিজ পায়ের জুতা খুলে লিলু মিয়াকে জুতাপেটা করেন।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে লিলু মিয়া বিশ্বনাথ থানায় সুহেল আহমদ চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে মারধরে জখম ও চুরির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। মামলায় জাহাঙ্গীর আলম নামের এক যুবদল নেতাকেও আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭ থেকে ৮ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি লিলু মিয়া বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে পছন্দের ব্যক্তিদের পদ না দেওয়ার কারণে সুহেল আহমদ চৌধুরী তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ ও বিরাগভাজন হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লিলু মিয়া সিলেটে যাওয়ার জন্য গতকাল রাতে বিশ্বনাথ উপজেলা সদর থেকে রওনা হচ্ছিলেন। এ সময় সুহেল আহমদ চৌধুরী তাঁকে গাড়ি থেকে নামিয়ে উপজেলা সদরের পুরান বাজার এলাকার থানা মসজিদের সামনে নিয়ে জুতাপেটা করেন।

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানান, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সুহেল আহমেদ চৌধুরী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করায় তিনি তখন জেলা বিএনপির সহসভাপতি পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। অন্যদিকে, লিলু মিয়া সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদি লুনার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, গত ১১ জানুয়ারি লিলু মিয়া বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে পছন্দের ব্যক্তিদের পদ না দেওয়ার কারণে সুহেল আহমদ চৌধুরী তাঁর প্রতি ক্ষুব্ধ ও বিরাগভাজন হন। এর আগেও একবার ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর রাতে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে সুহেল আহমদ চৌধুরী উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিনকে জুতাপেটা করেছিলেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সুহেল আহমদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে ভুক্তভোগী লিলু মিয়া আজ রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুহেল আহমদ চৌধুরী গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজের জন্য অনেক আগেই বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। তিনি কেন হঠাৎ এমন আচরণ করেছেন, তা আমার জানা নেই।’

বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লিলু মিয়া বলেন, এমন কিছু নয়। বহিষ্কার হওয়ার পর থেকে বিএনপির সঙ্গে সুহেল আহমদ চৌধুরীর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।