সিলেটে পুরোদমে ই-পাসপোর্ট সেবা শুরু হবে কাল
সিলেটে কাল সোমবার থেকে পুরোদমে ই-পাসপোর্ট পরিষেবা কার্যক্রম শুরু হবে। এই পদ্ধতিতে আবেদনকারীরা সহজেই আবেদন করতে পারবেন। এতে তাঁদের সময় বাঁচবে এবং ভোগান্তিও অনেক কম হবে। সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ই-পাসপোর্ট আবেদনকারীদের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয়ে প্রতিদিন পাঁচ–সাতজনের ই-পাসপোর্টের আবেদন নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকভাবেই চলছে মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যে ই-পাসপোর্ট পরিষেবা দেওয়ার জন্য কার্যালয়ের সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রশিক্ষণও নিয়েছেন।
ই-পাসপোর্ট বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনাসহ স্মার্টকার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়। ই-পাসপোর্টে যেসব বায়োমেট্রিক তথ্য নেয়া হয়, সেসব হলো ছবি, আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ও আইরিশ।
জানা গেছে, ই-পাসপোর্ট বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট, যাতে একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনাসহ স্মার্টকার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিপে সংরক্ষণ করা হয়। ই-পাসপোর্টে যেসব বায়োমেট্রিক তথ্য নেয়া হয়, সেসব হলো ছবি, আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ও আইরিশ। ইলেকট্রনিক বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থা (ই-বর্ডার) দিয়ে পাসপোর্ট চিপের বাইরের বায়োমেট্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর তুলনামূলক যাচাই করা হয়। তাই জালিয়াতি করা কঠিন।
সাধারণ পাসপোর্ট থেকে ই-পাসপোর্টের আছে কিছু বড় ধরনের পার্থক্য। এর মধ্যে একটি পার্থক্য হচ্ছে ই–পাসপোর্টে মুঠোফোনের সিমের মতো ছোট ও পাতলা আকারের চিপ থাকে। এতে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য থাকবে, যার অনেক বৈশিষ্ট্য থাকে লুকানো অবস্থায়।
ই-পাসপোর্ট করার সময় মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) তথ্যভান্ডারে পাওয়া তথ্যগুলো ই-পাসপোর্টে স্থানান্তর করা হবে।
সাধারণ পাসপোর্টের মতো ই-পাসপোর্টের আবেদনও অনলাইনে পাওয়া যাবে। আবেদনকারীরা চাইলে পিডিএফ ফরম নামিয়ে নিয়ে হাতেও পূরণ করতে পারবেন।
ফরম পূরণের সময় ছবি সত্যায়িত করা লাগবে না। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আবেদনপত্র গ্রহণের সময় আবেদনকারীর ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশের ছবি নেওয়া হবে। সেসব তথ্য চিপে যুক্ত হবে।
ইমিগ্রেশন পুলিশ বিশেষ যন্ত্রের সামনে পাসপোর্টের পাতাটি ধরতেই সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।
অতিব জরুরি আবেদনকারীরা দুই দিনের মধ্যেও ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন। তবে এর জন্য গুনতে হবে বাড়তি ফি। এর জন্য ২ দিনে সরবরাহ পেতে ৮ হাজার ৬২৫ টাকা দিতে হবে। এ ছাড়া সাধারণ ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনের নিয়মিত সরবরাহ ৪ হাজার ২৫ টাকা, ১০ দিনের দ্রুত সরবরাহ ৬ হাজার ৩২৫ টাকা, ৪৮ পৃষ্ঠা ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিন সরবরাহ ৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ১০ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৫০ টাকা এবং ২ দিনের সরবরাহ ১০ হাজার ৩৫০ টাকা। ৬৪ পৃষ্ঠার ৫ বছর মেয়াদি ২১ দিনে সরবরাহ ৬ হাজার ৩২৫, ১০ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৬২৫, ২ দিনের সরবরাহ ১২ হাজার ৭৫ টাকা, ৬৪ পৃষ্ঠা ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিনের সরবরাহ ৮ হাজার ৫০, ১০ দিনের সরবরাহ ১০ হাজার ৩৫০, ২ দিনে সরবরাহ পেতে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা।
তবে সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট কার্যালয়ে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। তাঁরা বলছেন, ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন মাধ্যমে সিলেট পাসপোর্ট কার্যালয়ে ই-পাসপোর্ট জমা নেওয়া হচ্ছে, এমন তথ্য পাওয়ার পর তাঁরা আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু কার্যালয়ে গিয়ে প্রথমে ই-পাসপোর্টের আবেদন কেউই গ্রহণ করতে চাননি। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের পর সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। আবেদনে কিছু ভুলভ্রান্তি হলে সেটি গ্রহণ করতে চাচ্ছেন না। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
ই-পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া কিছুদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। রোববার পর্যন্ত প্রায় ২০ জনের মতো আবেদনকারীর আবেদন জমা হয়েছে। সোমবার থেকে প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হবে।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ই-পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া কিছুদিন ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। রোববার পর্যন্ত প্রায় ২০ জনের মতো আবেদনকারীর আবেদন জমা হয়েছে। সোমবার থেকে প্রকল্পটি পুরোদমে চালু হবে। প্রাথমিক অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমে কিছুটা ভুলভ্রান্তি স্বাভাবিক। তবে আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই প্রকল্পটিতে দক্ষতা অর্জন করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ই-পাসপোর্টের জন্য আলাদা কাউন্টার করা হবে। প্রতিদিন কতজন ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন, তা আমরা আগের দিন জানতে পারব। ফলে আমাদেরও সুবিধা হবে। অন্যদিকে আবেদনকারীদের ই-মেইলে শিডিউল দেওয়া হবে। এতে তাঁদেরও ভোগান্তি কমবে। এতে আবেদকারীদের সময় বাঁচবে এবং তাঁদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না।’