সিলেটে পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে বিভাগীয় মহাসমাবেশ ১৬ জানুয়ারি

পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার বিষয়ে বুধবার রাতে সভা করে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সিলেট নগরের সোবহানীঘাট এলাকার একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে
প্রথম আলো

সিলেটের পাথর কোয়ারি খোলার দাবিতে এবার বিভাগীয় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ১৬ জানুয়ারি দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশিদ চত্বরে বিভাগীয় সমাবেশ করা হবে। সমাবেশ থেকে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমর্থনে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও শ্রমিক সংগঠনের আহ্বানে গতকাল বুধবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে সন্ধ্যায় সভা হয়। গত ২২ ডিসেম্বর ৭২ ঘণ্টা গণপরিবহন ধর্মঘট পালন করে সংগঠনটি। এই ধর্মঘট পালনপরবর্তী ‘মূল্যায়ন ও করণীয় সভা’ শেষে বিভাগীয় মহাসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলার সব পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া না হলে ১৬ জানুয়ারি বিভাগীয় মহাসমাবেশ কর্মসূচি থেকে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিবার পাথর কোয়ারি খোলার দাবিতে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে স্মারকলিপি, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে সভা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। ১৬ জানুয়ারি দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশিদ চত্বরে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নগরীর সোবহানীঘাট এলাকার একটি রেস্তোরাঁর সম্মেলনকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম হাদী ছয়ফুল। ঐক্য পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব ও সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু সরকার, ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক, সিলেট জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ জিয়াউল কবির, মৌলভীবাজার জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান, সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা ট্রাক-ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদাল মিয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জহির শিকদার প্রমুখ।

মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম হাদী বলেন, ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘটের পর নতুন বছরে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বই উৎসবসহ নানা বিষয় বিবেচনা করে আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে দেরি হয়েছে। ১৬ জানুয়ারির বিভাগীয় মহাসমাবেশের পরও পাথর কোয়ারি খোলা না হলে লাগাতার চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

জেলা প্রশাসন জানায়, পাথর কোয়ারির মূল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডিসি) উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পাথর কোয়ারি বন্ধ রেখেছে। জেলা প্রশাসন বিএমডিসির সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে। জেলার চার উপজেলার সাতটি পাথর কোয়ারি রয়েছে। এসব কোয়ারিতে ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৯৬ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৮ শ্রমিক নিহত হন।