সিলেটে নদীর পানি কমছে ধীরগতিতে, কমছে মূল সড়কেও
সিলেটে নদ-নদীর পানি কমছে ধীরগতিতে। নগরের প্রধান সড়কগুলো থেকে পানি কমলেও রয়ে গেছে পাড়া-মহল্লায়। এসব পানি কালো রং ধারণ করেছে।
রোববার সকালে নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নদ-নদীর পানির পরিমাপের প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। আজ সকাল ৯টায় সেখানে ১০ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। সেখানে রোববার সকাল ৯টায় পানি ছিল ১৩ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টের পানি শনিবারের তুলনায় দশমিক শূন্য ৪ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে শনিবার সন্ধ্যায় ১০ দশমিক ৫৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সেখানে রোববার সকাল ৯টায় প্রবাহিত হচ্ছিল ১০ দশমিক ৫৩ সেন্টিমিটার। নদীর শেরপুর পয়েন্টে শনিবার থেকে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রোববার সকালে সেটি আরও কমে ৮ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।
লুভা নদীর লুভাছড়া পয়েন্টে পানি শনিবারের তুলনায় দশমিক শূন্য ৪ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদের সারিঘাট পয়েন্টে পানি দশমিক শূন্য ৮ সেন্টিমিটার কমেছে। রোববার সকালে ওই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে পানি শনিবারের তুলনায় দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার কমে রোববার সকালে ৯ দশমিক ৭৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, ‘নদ-নদীর পানি কমছে ধীরগতিতে। এর মধ্যে নদীর কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশা করছি, অন্য নদীগুলোতেও বিপৎসীমার নিচে পানি নেমে আসবে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের শাহজালাল উপশহর, তেররতন, সোবহানীঘাট, যতরপুর, মিরাবাজার, জামতলা, তালতলা, শেখঘাট, বেতের বাজার, ঘাসিটুলা, কুয়ারপাড়, লালাদিঘীর পাড়, মির্জাজাঙ্গাল এলাকার পানি মূল সড়ক থেকে কমে গেছে। তবে পাড়া-মহল্লার অভ্যন্তরে সড়ক ও বাসাবাড়ির সামনে পানি এখনো জমে রয়েছে। এসব পানিতে ময়লা–আবর্জনা ভাসতে দেখা গেছে। পানিগুলোও পচে কালো রং ধারণ করে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
শাহজালার উপশহর এলাকার বাসিন্দা ফাহাদ মোহাম্মদ হোসেন বলেন, শাহজালাল উপশহর এলাকার ডি ব্লক বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ এলাকায় বাসাবাড়ি সড়ক থেকে নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি ঢুকে যায়। ১৬ জুন বাসা ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে উঠতে হয়েছিল। ১০ দিন সেখানে কাটিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শনিবার তিনি ঘরে ফিরেছেন। এখন সবকিছু ধোয়ামোছা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঘর থেকে পানি নেমে গেলেও মহল্লার সড়কে পানি রয়ে গেছে। এখন এসব ময়লা কালো পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে লোকজন বাসাবাড়িতে ফিরতে শুরু করেছে। রোববার সকাল পর্যন্ত মহানগর এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অবস্থান করেছিল।