সিলেটে দরজি ইমরান হত্যা মামলায় নারীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের কানাইঘাটে পরকীয়া সম্পর্কের জেরে দরজি ইমরান হোসেন (২৫) হত্যা মামলায় নারীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে উভয়কে এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার অপর দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া এ আদেশ দেন।
জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) রঞ্জিত সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মামলায় ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন সুহাদা বেগম (২৫) ও জাহাঙ্গীর আলম (২৬)। সুহাদা বেগম কানাইঘাট উপজেলার দুর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের সৌদিপ্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী এবং জাহাঙ্গীর আলম তাঁর প্রতিবেশী এবং নিকটাত্মীয়। মামলায় খালাস পেয়েছেন সুহাদার ভাই ইমরান আহমদ (২৯) ও দেবর মাসুম আহমদ (৩৪)।
২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন ইমরান আহমদ। তিনি কানাইঘাট পৌর শহরে চয়েস টেইলার্স নামের একটি দোকানের মালিক ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হন ইমরান আহমদ। তিনি কানাইঘাট পৌর শহরের সোনাপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। পৌর শহরে চয়েস টেইলার্স নামের একটি দোকানের মালিক ছিলেন তিনি। তাঁকে কথিত প্রেমিকা সুহাদার শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এরপর থেকে নিখোঁজ হন ইমরান আহমদ। নিখোঁজের দুই দিন পরও তাঁর কোনো সন্ধান না পেয়ে ইমরান আহমদের বাবা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে কানাইঘাট থানায় তিনি সুহাদা বেগম ও তাঁর ভাই ইমরান আহমদ, দেবর মাসুম আহমদ ও লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার পরপরই পুলিশ সুহাদা বেগম ও জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী সময়ে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে সুহাদার শ্বশুরবাড়ির পুকুর থেকে ইমরান হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুহাদা বেগম। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চারজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে আদালতের বিচারক সাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে গতকাল আজ রায় ঘোষণা করেন।