সিরাজগঞ্জ জেলা আ.লীগের সম্মেলনে ‘ভারমুক্ত’ হলেন হাসান–সামাদ

নতুন কমিটিতে হোসেন আলীকে সভাপতি ও আবদুস সামাদ তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে হোসেন আলী হাসানকে সভাপতি ও আবদুস সামাদ তালুকদারকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই দুই নেতা এত দিন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আজ সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটির ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সম্মেলনের উদ্বোধক আবদুর রহমান।

জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া। পরে গোলাম কিবরিয়া মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় সাংসদ হাবিবে মিল্লাত। দলীয় কোন্দলের কারণে ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর সভাপতি আবদুল লতিফ বিশ্বাস ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাংসদ হাবিবে মিল্লাতকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তার পর থেকেই হোসেন ও আবদুস সামাদ ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সভাপতি পদে পাঁচজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থী ছিলেন।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের পর আগের কমিটি বিলুপ্ত করে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। এর আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের নিয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ আলাদাভাবে মতবিনিময় করেন। এ সময় তাঁরা দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গেও মুঠোফোনে পরামর্শ করেন। সেখান থেকে মঞ্চে ফিরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিতে ভয় পায়। ভবিষ্যতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আবার জনগণের ভোটে জয় লাভ করবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন আমাদের জন্য অতীতের মতো সহজতর হবে না। প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবা যাবে না, আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে দলের ত্যাগী নেতাদের নেতৃত্ব এনে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে।’

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, স্থানীয় সাংসদেরা। সভাপতিত্ব করেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হোসেন আলী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৩ বছরে যাঁরা আওয়ামী লীগের সুদিনে নতুন যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য দলের নেতৃত্বে আসার কোনো সুযোগ নেই। দলের যেসব ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নির্যাতিত নেতা নতুন আগত ব্যক্তিদের উত্তাপে সংকুচিত হয়ে আছেন, তাঁদেরই নেতৃত্বে আনা হবে।

বিএনপির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, মিথ্যাচার করাই বিএনপির কাজ। মিথ্যাচারে একে অপরকে টপকাতে বেশির ভাগ নেতা মিথ্যাচার করেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম রাজনৈতিকভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যা বলায় অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাঁরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তাই তাঁরা নির্বাচন চান না।