সিংড়ায় সেতু ব্যবহার করতে সাঁকোয় চলাচল
প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে নাটোরের সিংড়া উপজেলার বন্দর-কালিগঞ্জ সড়কের মাঝগ্রাম সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি ব্যবহার করতে বাঁশের সাঁকোয় চলাচল করতে হচ্ছে। এ কারণে সেতুতে জনদুর্ভোগ তো কমেইনি, বরং বেড়েছে।
সিংড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সিংড়ার গোপালপুর কবরস্থানের কাছে ১৫ ফুট প্রশস্ত ও ৩৬ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করা হয়। নাটোরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লোকনাথ এন্টারপ্রাইজ ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। কিন্তু সেতুটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। রাস্তা থেকে সেতুটি অন্তত ১০ ফুট চড়া হওয়ায় পথচারী ও যানবাহন সেতুটিতে উঠতে পারেন না। পাশের মসজিদ-মাদ্রাসার লোকজন যাতায়াতের জন্য সেতুতে ওঠার জন্য বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। বাঁশের এই সাঁকো বেয়ে তাঁরা ওঠানামা করছেন। সরু এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
৫ মার্চ সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কংক্রিটের সেতুর দুই প্রান্তে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাঁশ বেঁধে পারাপারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনসাধারণকে ঝুঁকিপূর্ণ ওই সাঁকো দিয়ে সেতুতে ওঠানামা করতে হচ্ছে।
মাঝগ্রাম-গোপালপুর জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. ওসমান আলী বলেন, বন্যায় দুর্ভোগ লাঘবে মুসল্লিদের চলাচলের জন্য গোপালপুর চুরামনবাটি মৌজায় একটি সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। কিন্তু সেতু নির্মাণের ফলে সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ঘটলেও সংযোগ সড়ক থাকায় মসজিদ ও কবরস্থানে আসা শতাধিক মুসল্লিকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পরে সেতুর দুই পাশে নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়।
স্থানীয় কৃষক রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জলি বেগম বলেন, প্রায় এক বছর হলো সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে উঠতে গিয়ে গৃহবধূ আয়েশা বেগম ও তাঁর শিশুছেলে-মেয়ে পানিতে পড়ে আহত হয়। প্রায়ই সেখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত সেতুর পাশে মাটি ভরাটের দাবি জানান তিনি।
মেসার্স লোকনাথ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিধান সরকার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটির নির্মাণকাজ অনেক আগেই শেষ হলেও বরাদ্দ এবং মাটি–সমস্যার জন্য সংযোগে মাটি ভরাট করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় লালোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারের উদাসীনতার কারণে সেতুটি অকেজো হয়ে আছে। বিষয়টি নিয়ে বারবার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আর এখানে কোনো মাটির সমস্যা নেই বলে জানান তিনি।
সিংড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল আমিন সরকার জানান, দ্রুতই সেতুর দুই পাড়ে মাটি ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে।