সাতক্ষীরা জজকোর্টের পিপির অনিয়মের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
সাতক্ষীরা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল লতিফের অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও কামারবায়সা গ্রামবাসীর ব্যানারে সোমবার সকাল ১০টায় জজকোর্টের শহীদ মিনার পাদদেশে ওই কর্মসূচি পালিত হয়।
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এবং সাবেক অতিরিক্ত পিপি আজহার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাবেক পিপি ওসমান গণি, আবু রায়হান, সাহেদুজ্জামান সাহেদ, সাবেক অতিরিক্ত জিপি নওশের আলী প্রমুখ।
গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে পৃথক মানববন্ধনে বক্তব্য দেন আবদুল লতিফের ভাতিজা মোজাম্মেল হক, আকবর আলী, নজরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা রওশান আলী, মুক্তিযোদ্ধা রুস্তুম আলীর স্ত্রী রাজেয়া বেগম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বর্তমান জজকোর্টের পিপি আবদুল লতিফ পিপিশিপ দেওয়ার নাম করে ১৫ জন আইনজীবীর কাছ থেকে মাথাপিছু ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে তাঁদের হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় কামারবায়সা গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় সায়েদুজ্জামান আদালতে প্রতারণার মামলা করেন। এদিকে লতিফের নিজ গ্রাম দক্ষিণ কামারবায়সার নজরুল ইসলাম ও আকবর আলী বাদী হয়ে তাঁর (লতিফ) বিরুদ্ধে পৃথক দুটি প্রতারণার মামলা করেন। আকবর জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগও করেছেন। এ ছাড়া লতিফের স্নাতক সনদ জাল অভিহিত করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন আইনজীবীরা।
২০০২ সালে কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জিল্লুর রহমান আসামিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তৎকালীন পিপি ওসমান গণি তাঁকে বহিষ্কার করলেও বর্তমান পিপি তাঁকে অতিরিক্ত পিপি বানিয়ে পুরস্কৃত করেছেন। এ ছাড়া ঘুষ–দুর্নীতির বিনিময়ে তিনি স্বাধীনতাবিরোধী আইনজীবী মিজানুর রহমানকে অতিরিক্ত পিপি বানিয়েছেন।
জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে লতিফের নির্দেশে তাঁর ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা রোববার দুপুরে বড় ভাই আহাদ, ভাবি সেলিনা, ভাইয়ের ছেলে তোফাজ্জল, মজনু ও মোজাম্মেলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে।
এদিকে কামারবায়সা গ্রামের বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ দলীয় পদ ও পিপিশিপকে ব্যবহার করে লতিফ এলাকার মানুষের ওপর দমন–পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর কথা না শুনলে মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ জমি জবরদখল করা হচ্ছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দুর্নীতিবাজ লতিফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তাঁরা।
তবে এ ব্যাপারে পিপি লতিফ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, তাঁর ভালো কাজে ঈর্ষান্বিত হয়ে ওসমান গণি, সাহেদুজ্জামানসহ একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।