সরাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল আরেক শিক্ষার্থীর

আরমান মিয়ার এমন মৃত্যুতে স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। আজ সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত এক ছাত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে আরেক ছাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম আরমান মিয়া (১৬)। সে পানিশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। এ বছর তার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল। আরমান মিয়া পানিশ্বর ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের এলাই মিয়ার ছেলে। আহত ওই ছাত্রীর নাম আঁখি নূর (১৪)। সে একই গ্রামের বিল্লাল মিয়ার মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পানিশ্বর বাজারে নির্মাণাধীন একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় পানিশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম প্রাইভেট পড়ান। আরমান মিয়া প্রতিদিনের মতো আজ সকাল আটটার দিকে সেখানে প্রাইভেট পড়তে যায়। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক ছাত্র-ছাত্রী সেখানে প্রাইভেট পড়ে বলে জানা গেছে।

সকাল নয়টার দিকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আঁখি নূর দ্বিতীয় তলার ছাদে বিদ্যুতের একটি তারে জড়িয়ে যায়। খবর পেয়ে আরমান মিয়াসহ আরও কয়েকজন দৌড়ে ছাদে যায়। সেখানে আরমান আঁখিকে উদ্ধার করতে গেলে সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। তখনই স্থানীয় লোকজন আরমান ও আঁখিকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমানকে মৃত ঘোষণা করেন। আঁখি বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আঁখি বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন
ছবি: প্রথম আলো

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেলে জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আরমানের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এদিকে ঘটনার পর থেকে শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কোনো স্কুলশিক্ষকের এভাবে প্রাইভেট পড়ানোর বিধান নেই। এ ছাড়া যে ভবনে পড়ানো হচ্ছিল, সেটিও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দশ দেওয়া হয়েছে।