সবার হাতে হাতে কার্ড, রংপুরে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনতে আসা উপকারভোগীদের হাতে হাতে কার্ড। কার্ড থাকলেই পণ্য পাবেন, তাই তো সবার মুখে হাসি। চৈত্রের দাবদাহ উপেক্ষা করে সারবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছেন কার্ডধারীরা। দীর্ঘ লাইন।
আজ রোববার থেকে রংপুর জেলার আট উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও তিনটি পৌরসভায় একযোগে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। ভর্তুকি মূল্যে চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল—এই তিন পণ্য কিনতে সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জেলায় ২৪টি কেন্দ্রে টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় ছয়টি, কাউনিয়া উপজেলায় একটি, মিঠাপুকুরে পাঁচটি, গঙ্গাচড়ায় দুটি, বদরগঞ্জে একটি, পীরগঞ্জে একটি, পীরগাছায় পাঁচটি, রংপুর সদরে দুটি ও তারাগঞ্জে একটি কেন্দ্রে পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল ১০টায় সিটি করপোরেশন এলাকার রাধাবল্লভে ডায়াবেটিক হাসপাতাল চত্বরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান ও জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।
নগরের ডায়াবেটিক হাসপাতাল চত্বরে সরেজমিনে দেখা গেছে, টিসিবির পণ্যের জন্য নারী ও পুরুষের পৃথক দুটি দীর্ঘ লাইন। প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সবার হাতে হাতে কার্ড। কার্ডে ছবিও আছে উপকারভোগীদের, যাতে অন্য কেউ পণ্য কিনতে না পারেন।
দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রাধাবল্লভ এলাকার বাসিন্দা কল্পনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, সকালে এসে দেখেন, দীর্ঘ লাইন। তবে আগের মতো হুড়োহুড়ি নেই। সবাই কার্ড নিয়ে আসছেন। একজনের পণ্য আরেকজন নিতে পারছেন না। কার্ডের ব্যবস্থা করায় তাঁর সুবিধা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ধাপ ভগি এলাকার বাসিন্দা হোসনে আরা বলেন, ‘৪৬০ টাকায় ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেল কিনলাম। বাজার থাকি কিনবার গেইলে আরও ২২০ থেকে ২৩০ টাকার মতো বেশি লাগিল হয়। সেই টাকা দিয়া সবজিসহ অন্য কিছু কেনা যাইবে।’
বাজারে মসুর ডাল, চিনি, তেলের দাম প্রতিনিয়ত বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ এখন টিসিবির পণ্যের জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কার্ডধারী একজন উপকারভোগী ৫৫ টাকা দরে ২ কেজি চিনি, ৬৫ টাকা দরে ২ কেজি মসুর ডাল ও ১১০ টাকা দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল ভর্তুকি মূল্যে পাচ্ছেন। অন্যদিকে খোলাবাজারে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকা, চিনি ৮৫ থেকে ৯০ টাকা, মসুর ডাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, ন্যায্যমূল্যে আজ প্রথম পর্যায়ে পণ্য দেওয়া শুরু হলো। ৩০ মার্চ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। একজন উপকারভোগী কার্ডধারী প্রতি ধাপে একবার পণ্য পাবেন। দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হবে আগামী ৩ এপ্রিল থেকে। জেলায় ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩১২ জন কার্ডধারী এসব পণ্য পাবেন।