সখীপুরে ‘গায়েবি’ মামলায় বিএনপির ৪৯ নেতা–কর্মী কারাগারে
টাঙ্গাইলের সখীপুরে একটি মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৪৯ নেতা–কর্মীকে আজ রোববার কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের হওয়া মামলাটি ‘গায়েবি’ বলে অভিযোগ বিএনপির।
আসামিপক্ষের আইনজীবী এস এম ফায়জুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ বিকেলে ওই মামলার ৫৯ আসামি টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সখীপুর আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানান। আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত ৪৯ জনকে জামিন না দিয়ে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অসুস্থ ও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে ১০ জনকে আদালত জামিন দিয়েছেন।
এর আগে একই মামলায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ২৫ নেতা–কর্মী গত ১২ জানুয়ারি একই আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ২০ দিন কারাভোগের পর ১ ফেব্রুয়ারি ১ জন বাদে ২৪ জন জামিনে ছাড়া পান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসনে বিএনপির জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী। ওই নির্বাচনের ১০ দিন আগে ১৮ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বড়চওনা এলাকায় টহলরত পুলিশের গাড়িতে হামলা ও পুলিশের পিকআপ ভ্যান ভাঙচুরের অভিযোগে সখীপুর থানার পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। ১৯ ডিসেম্বর করা মামলায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ১৯৪ জনকে আসামি করা হয়।
ঘটনার ১ বছর ১০ মাস পর পুলিশ তদন্ত করে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর ১২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
আদালতে আত্মসমর্পণ করা নেতা–কর্মীদের মধ্যে আছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর, সাবেক সহসভাপতি আবদুল বাছেত মাস্টার, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছবুর রেজা, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি শাজাহান সাজু প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা–কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ বাদী হয়ে গাড়ি ভাঙচুরসহ কয়েকটি ‘গায়েবি’ মামলা করে। গায়েবি মামলার আসামিদের দ্রুত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।