রংপুরের তারাগঞ্জ
শুষ্ক মৌসুমে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে ট্রাক-ট্রলি
উপজেলার বেলতলী–ঠাকুরপাড়া কাঁচা রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ড্রাম ট্রাক ও ট্রলি বালু বহন করে।
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার বেলতলী-ঠাকুরপাড়া কাঁচা রাস্তাটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন কিলোমিটার। সাতটি গ্রামের প্রায় চার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। তবে দুই মাস ধরে এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত শতাধিক বালুবাহী ড্রাম ট্রাক যাতায়াত করায় ধুলা ওড়ে। এতে কাঁচা সড়কটি যেমন আরও বেহাল হয়েছে, তেমনি ধুলায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে আশপাশের বাসিন্দাদের।
শীত বিদায়ের পর মৌসুমের এই সময়টায় এমনিতেও প্রকৃতি বেশ শুষ্ক থাকে। দিনের বেলায় যখন সড়কটি দিয়ে বালুবাহী ট্রাক যায়, তখন ধুলায় চারপাশ ঢেকে যায়। সম্প্রতি এই সড়কে চলাচলকারী পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই মাস ধরে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ও ট্রলি বালু বহন করে। এসব বালু আনা হয় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়বালা এলাকার যমুনেশ্বরী নদী থেকে।
কয়েকজন পথচারী জানান, তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রামপুরা গ্রামের জিয়াউর রহমান বিভিন্ন স্থানে বালু নিয়ে বিক্রি করেন। যোগাযোগ করা হলে জিয়াউর রহমান বলেন, বালু বিক্রি শেষ হলেই রাস্তাটির দেবে যাওয়া অংশ ঠিক করে দেবেন। আর ট্রাক, ট্রলি চলাচলে মানুষের যাতে দুর্ভোগ না হয়, এ জন্য প্রতিদিন চারজন লোক রাস্তায় পানি ছিটানোর কাজ করেন।
কিন্তু সড়কের আশপাশে বসবাসকারীরা জানান, পানি ছিটালেও একটু পরই তা শুকিয়ে যায়। তখন ট্রাক চলাচলে ধুলা ওড়ে। সড়কটি উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দূরের হাঁড়িকাটা, ঘনিরামপুর, নদীরপাড়, হাজিপাড়া, ঠাকুরপাড়া, বেলতলী, বালাপাড়াসহ সাতটি গ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছে।
হাঁড়িকাটা গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তা কোনো দিয়া ধুলার তকনে হাঁটা যায় না। যখনে বালুভর্তি বড় বড় ট্রাক যায়ছে, মনে হওছে ধুলার মেঘ উড়াওছে। নাক-মুখ ঢাকি যাওয়া আইসা করলেও গাও ধুলাতে নেটপেটা (মেখে যাওয়া) হয়া যায়।’
কাঁচা সড়কটিতে নিয়মিত অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক, ট্রলি চলাচল করায় বেশ কয়েকটি স্থানে দেবে গেছে। ধুলার দুর্ভোগ, আর সড়কের ক্ষতি নিয়ে সম্প্রতি তারাগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রিয়াদুন্নবী রিয়াদ। তিনি বলেন, বালু-মাটিবাহী ট্রাক, ট্রলির দাপটে গ্রামের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ। এ কারণে তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ওসি ফারুক আহম্মেদ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে ট্রাকচালকদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। ওই রাস্তা দিয়ে ট্রাক-ট্রলির চলাচল বন্ধ করতে আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও সড়কটি দিয়ে বালুবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।