শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শতাধিক ছাত্রীর অবস্থান
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একটি আবাসিক হলের ছাত্রীদের সঙ্গে প্রাধ্যক্ষের অসদাচরণের অভিযোগ এনে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন কয়েক শ ছাত্রী। অভিযোগের জেরে দুই দফা দাবি তুলেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ছাত্রীরা এ বিক্ষোভ শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিবাগত রাত একটা পর্যন্ত ছাত্রীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের সামনে অবস্থান করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে সিলেট নগরের জালালাবাদ থানার বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আন্দোলনরত ছাত্রীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা কিছু সমস্যার কথা বলতে প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার মুঠোফোনে কল করেন। এ সময় তিনি ছাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এর প্রতিবাদে ছাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাঁরা স্লোগান দিয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের ফটক খুলে ভেতরে প্রবেশ করে অবস্থান নেন। এর পর তাঁরা দুই দফা দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন। দাবিগুলো হলো—হলের সব প্রাধ্যক্ষকে পদত্যাগ এবং সবাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। ছাত্রীদের অভিযোগ, প্রাধ্যক্ষ ও নিরাপত্তাকর্মীদের খারাপ ব্যবহারসহ হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে। এসব নিয়েই তাঁরা হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
রাত সোয়া ১২টার দিকে শাবিপ্রবির প্রক্টর আলমগীর কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। তাঁদের সমস্যাগুলো জানার চেষ্টা করছি। নিশ্চয়ই ছাত্রীরা হলে ফিরে যাবে।’ হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজা করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
প্রাধ্যক্ষ জাফরিন লিজার সঙ্গে যোগাযোগে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে ছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সিরাজুন্নেসা হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ রাবেয়া তোরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। আমি সমস্যাগুলো জানতে ছাত্রীদের কাছে যাচ্ছি।’
এদিকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও জাতীয় ছাত্রদল (এনডিএফ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। রাত সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ছাত্রীদের কয়েকজন প্রতিনিধিকে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ জানালে ছাত্রীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁরা এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানান, যেহেতু সমস্যা হলের সব ছাত্রীর, তাই উপাচার্যকে সবার সামনে এসে কথা বলতে হবে।