মেহেরপুরের গাংনী
লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ
২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চার দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে ১৩ মেগাওয়াট করে।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় লোডশেডিংয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। পাশাপাশি রয়েছে লো-ভোল্টেজের সমস্যা। প্রতিদিন পাঁচ-ছয় ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। রমজানের শুরু থেকে এভাবে চলছে। ইফতার, তারাবিহ ও সাহ্রির সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় সেচযন্ত্র ঠিকমতো চলছে না। এতে বোরো ধানসহ ফসলি জমিতে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গাংনী আঞ্চলিক কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, দুটি সাবস্টেশনের ৭টি ফিডারে ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চার দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছে ১৩ মেগাওয়াট করে। চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের একটু বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
গাংনী পৌরসভার বাসিন্দা সানোয়ার হোসেন বলেন, রমজানের শুরু থেকে লোডশেডিং তীব্রতর হয়েছে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার পাঁচ-ছয় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল না। ইফতার, তারাবিহ ও সাহ্রির সময় বিদ্যুৎ থাকে না। মানুষের কোনো শান্তি নেই।
গ্রামের পরিস্থিতি আরও খারাপ। সেখানে আরও দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ থাকছে না। উপজেলার কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হানেফ রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকেও বলা হয়েছে রমজান মাসের তিনটি সময় (ইফতার, তারাবিহ ও সাহ্রি) কোনো লোডশেডিং থাকবে না। এরপরও কেন লোডশেডিং হচ্ছে?’
রমজানের শুরু থেকে লোডশেডিং তীব্রতর হয়েছে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার পাঁচ-ছয় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ ছিল না।
লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি নিয়ে অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গত সোমবার উপজেলার মটমুড়া ইউপির সদস্য শাজাহান মিয়া পল্লী বিদ্যুতের এক কর্মকর্তার সমালোচনা করে একটি ভিডিও শেয়ার করেন। ওই ভিডিওতে তিনি এ সমস্যার সমাধান করতে বলেন। অন্যথায় তাঁকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন।
এ সম্পর্কে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক নাসিরুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ রমজানে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে লোডশেডিং শুরু হয়েছে। অনেকে বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে উত্তেজিত কথাবার্তা বলছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিম বলেন, বোরো ধানের খেতে প্রচুর পানি দিতে হচ্ছে। গরমের সময় ঘন ঘন সেচ না দিলে ধানের ফলন ভালো হবে না। আর এ সময় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। ধানের খেত হুমকিতে রয়েছে।
বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) ঝিনাইদহ উপকেন্দ্র থেকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর জোনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। পিজিসিবি ঝিনাইদহের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, গ্যাসের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। আশা করা হচ্ছে, দুই-তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।