রোহিঙ্গা দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি, মুন্না বাহিনীর গুলিতে আরসা সদস্য নিহত

রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির
ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সি-ব্লকে গতকাল বুধবার রাতে হামলা চালিয়ে মিয়ানমারের সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কয়েকজন সদস্য। এ সময় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আরেকটি গ্রুপ মুন্না বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে আরসা সদস্য মো. সলিম উল্লাহ (৩০) নিহত হয়েছেন। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-২, পশ্চিম) সি-২ ব্লকের বাসিন্দা আবদুস শুক্কুরের ছেলে।

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, সলিম উল্লাহ আরসার সক্রিয় সদস্য। গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের বালুরমাঠের পিটখোলা বাজার এলাকায় দুই পক্ষে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত আশ্রয়শিবিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আরসা সদস্যদের হামলার আশঙ্কায় সাধারণ রোহিঙ্গারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

দুই পক্ষ গুলি ছুড়ে। গুলিতে আরসা সদস্য সলিম উল্লাহ আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান।

রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় পুলিশ মাত্র দুই দিন আগে আরসার (আল-ইয়াকিন নামেও পরিচিত) ২৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে । এর রেশ ধরে আরসা সদস্যদের সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় উখিয়ার আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাধারণ রোহিঙ্গার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিল।

আরও পড়ুন

গুলিতে একজন নিহত ব্যক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, নিহত রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করে আজ সকালে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার মো. নাঈমুল হক বলেন, গতকাল রাতে আশ্রয়শিবিরের বালুরমাঠের ২ নম্বর পিটখোলা বাজার এলাকায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী মুন্না গ্রুপের সঙ্গে কথিত আরসা গ্রুপ মুখোমুখি হয়। এরপর দুই পক্ষ গুলি ছুড়ে। গুলিতে কথিত আরসা সদস্য সলিম উল্লাহ আহত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান। নাঈমুল হক বলেন, আশ্রয়শিবিরের পরিস্থিতি এখন শান্ত এবং স্বাভাবিক। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ২০২১ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লাম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের ডি-ব্লকের আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ (৫০)। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ঘটনায় পর দিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। দীর্ঘ ৮ মাস ১৩ দিন পর গত ১৪ জুন আদালতে আরসার ২৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে উখিয়া থানা-পুলিশ। তবে নাম-ঠিকানা শনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে আরসার প্রধান নেতা আতাউল্লাহ আবু আহাম্মার ওরফে জুনুনিসহ সাতজনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন