রাজশাহীতে সার্জেন্টকে পেটানো মামলার আসামি গ্রেপ্তার
রাজশাহীতে তল্লাশিচৌকিতে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্টকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত একটার দিকে জেলা পুলিশের সহায়তায় নাটোর সদরের মাদ্রাসা মোড় থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার যুবকের নাম বেলাল হোসেন (২৬)। তিনি নগরের রাজপাড়া থানাধীন লক্ষ্মীপুর ভাটাপাড়া এলাকার শামসুল হকের ছেলে। বেলালকে ধরতে রাজপাড়া থানাসহ নগরের সব কটি থানা একসঙ্গে কাজ করেছে। এ ছাড়া নগর পুলিশের একটি কেন্দ্রীয় বিশেষ টিমও কাজ করছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে মারধরের শিকার সার্জেন্ট বিপুল ভট্টাচার্য বাদী হয়ে নগরের রাজপাড়া থানায় মামলা করেন।
বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাটোর জেলা পুলিশের সহায়তায় আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সার্জেন্ট বিপুলের ওপর হামলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করব, তিনি কেন এত উত্তেজিত হলেন? হামলাকারীর মোটরসাইকেলের বিআরটিএর কাগজপত্র আপডেট ছিল না। তাই তিনি কাগজপত্র সার্জেন্টকে দেখাবেন না। পরে বিআরটিএ অফিস থেকে আমরা কাগজপত্র তুলে বিষয়টি জানতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর বেলাল কোথায় গিয়েছিলেন, কার কাছে ছিলেন, সব তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যাঁরা বেলালকে আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় আগামী ২৬ মার্চের আগেই ৫০০ সিসি ক্যামেরা বসানো হবে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে নগরের রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকার ঐতিহ্য চত্বরে মোড়ে সার্জেন্ট বিপুল ভট্টাচার্যকে কাঠের চেলা দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন বেলাল। পরে আহত অবস্থায় বিপুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় তাঁর বাঁ হাত ভেঙে গেছে বলে চিকিৎসকের বরাতে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের কাগজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন সার্জেন্ট বিপুল ভট্টাচার্য (৩২)। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল আরোহী যুবককে থামিয়ে তাঁর মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। এ নিয়ে প্রথমে বিপুলের সঙ্গে ওই যুবকের কথা-কাটাকাটি হয়। পরে একপর্যায়ে ওই যুবক সার্জেন্ট বিপুলের ওপর হামলা চালান। জনসমাগম হওয়ার আগেই ওই যুবক বিপুলকে কাঠের চেলা দিয়ে পিটিয়ে জখম করে মোটরসাইকেল ফেলে রেখে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে পুলিশ গিয়ে আহত সার্জেন্টকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, হেলমেট না পরায় সার্জেন্ট ওই যুবককে থামান। পরে হেলমেট না থাকায় এবং মোটরসাইকেলের কাগজপত্র না থাকার কারণে মামলা দিতে শুরু করলে আচমকা চেলাকাঠ নিয়ে এসে তাঁর ওপর হামলা করেন বেলাল হোসেন।