রাজবাড়ীতে ভাবিকে হত্যার দায়ে দেবরের যাবজ্জীবন
রাজবাড়ীতে ভাইয়ের স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) উজির আলী শেখ।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম হামেদ আলী মণ্ডল (৪০)। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। হামেদের বাবার নাম কেসমত আলী মণ্ডল।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, হত্যার ঘটনাটি ২০১৪ সালের আগস্ট মাসের। তারও ১৫-১৬ বছর আগে গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মোল্লার মেয়ে পারভীনের (২৬) সঙ্গে খানখানাপুরের পশ্চিমপাড়ার কেসমত আলী মণ্ডলের ছেলে হাসেমের বিয়ে হয়। হাসেম-পারভীন দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। হাসেম তাঁর ছোট দুই ভাই হামেদ ও সুলতানের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকতেন। এরই মধ্যে তিন ভাইয়ের মধ্যে পারিবারিক কলহ বাধে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার বাগ্বিতণ্ডা ও ঝগড়া হয়। এ ঝগড়ার জেরে বড় ভাই হাসেমের স্ত্রীকে ২০১৪ সালের ৯ আগস্ট সকালে কুপিয়ে হত্যা করে মেজ ভাই হামেদ।
এ ঘটনার পর পারভীনের ভাই খোকন মোল্লা বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় হামেদ মণ্ডলকে এবং বাকি তিন আসামি তাঁর পরিবারের তিন নারী সদস্য।
এজাহারে ঘটনার দিনের বর্ণনায় লেখা আছে, ওই দিন সকালে পারভীনের স্বামী হাসেম মাঠে কাজ করতে যান। আর তাঁর ১২, ৮ ও ৬ বছরের তিন সন্তান যায় স্কুলে। এ সময়ের মধ্যেই হামেদ মণ্ডলের নেতৃত্বে পারভীনের ওপর হামলা করা হয়। পারভীন এ সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে শৌচাগারে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন হামেদ। নিহতের সন্তানেরা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে মাকে খুঁজে না পেয়ে চাচা হামেদকে জিজ্ঞেস করে। তখন হামেদের পোশাকে রক্ত লেগে ছিল। তিনি তাদের মা ‘টয়লেটে আছে’ জানালে বাচ্চারা শৌচাগারে খোঁজ করে। এ সময় মায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখে তারা চিৎকার করলে মামলার আসামিরা পালিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
দীর্ঘ যুক্তিতর্ক শেষে আজ রায় ঘোষণা হয়। আদালত শুধু এক আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেন। মামলার অন্য আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।