রক্তাক্ত নিথর শরীর নিয়ে শেষবারের মতো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রিয় শিক্ষক

শিক্ষক আইয়ুব আলী
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিনের মতো বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন শিক্ষক আইয়ুব আলী। আজ সোমবার সকালে যখন তিনি বিদ্যালয়ে পৌঁছান, তখন তাঁর দেহ নিথর রক্তাক্ত। সহকর্মী ও শত শত শিক্ষার্থী তাঁকে এক নজর দেখতে ভিড় করেন। প্রিয় শিক্ষকের নিথর রক্তাক্ত শরীর দেখে কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

শিক্ষক আইয়ুব আলী (৩৪) নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের আকবর আলীর ছেলে। আজ সকালে বিদ্যালয়ে আসার পথে চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পেছন থেকে বালুবোঝাই একটি ট্রাক্টর চাপা দিলে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিক্ষক আইয়ুব আলী। আজ সোমবার সকালে সিংড়া চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে
ছবি: প্রথম আলো

দুর্ঘটনায় নাইচ হোসেন (১৮) নামের এক ভ্যানচালকও আহত হন। এ ঘটনায় ট্রাক্টরের চালক সাকিল হোসেনকে (১৮) স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন। আটক চালক সিংড়া পৌর শহরের নিংগইন মহল্লার জসমত আলীর ছেলে।

ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানা ও চৌগ্রাম উচ্চবিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক আইয়ুব আলী সিংড়া থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে চৌগ্রাম বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে বালুবোঝাই একটি ট্রাক্টর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলটি চাপা দেয়। এতে তাঁর মোটরসাইকেলসহ বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যান দুমড়েমুচড়ে যায়। ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিক্ষক আইয়ুব আলী। গুরুতর আহত হন ভ্যানচালক নাইচ।

আহত ভ্যানচালককে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর নিহত শিক্ষকের মরদেহ তাঁর কর্মস্থলে নেওয়া হলে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। নিথর রক্তাক্ত শরীর দেখে অনেক শিক্ষার্থী বাক্‌রুদ্ধ হয়ে যায়। বিদ্যালয়জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে।

ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ট্রাক্টরটি জব্দ করা হয়েছে ও ট্রাক্টরের চালককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।