রংপুরের হারাগাছের পরিস্থিতি এখন শান্ত, মামলা ও আটক নেই
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামের একজনের মৃত্যুর অভিযোগে ক্ষুব্ধ জনতার থানা ঘেরাও ও ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। তবে থানা ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। সেখানকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। সকাল থেকে দোকানপাট খুলেছে।
মৃত তাজুল ইসলামের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল সোমবার রাত তিনটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মৃত ব্যক্তির ছোট ভাই মোর্তুজা রহমান বাদী হয়ে গতকাল রাত পৌনে তিনটার দিকে হারাগাছ থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করেছেন।
প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন।
স্থানীয় কয়েকজনের ভাষ্য, কাউকে আটক করা হয়নি। হারাগাছে সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। দোকানপাট খুলেছে। মানুষজন স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
মৃত তাজুলের বাড়ি হারাগাছের নয়া টারী দালালহাট গ্রামে। সেখানে ভিড় জমিয়েছেন লোকজন। তাঁর ছোট ভাই লোটাস মিয়ার ভাষ্য, দরদি স্কুলের পূর্ব পাশে নয়াবাজার থেকে পুলিশ তাজুল ইসলামকে প্রথমে আটক করে। কিছুক্ষণ পর তাঁরা জানতে পারেন, ভাই মারা গেছে। সেখানে জনগণের তাড়া খেয়ে পুলিশ লাশ ফেলে চলে যায়। এরপর লোকজন মিছিল করেন। তিনি জানালেন, তাঁর ভাই অবিবাহিত।
সরেজমিনে থানায় গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিক্ষেপ করা ইটপাটকেল থানা এলাকায় জড়ো করে রাখা হয়েছে। থানার ভেতরে শিশু ও সেবাকেন্দ্রের কক্ষটি বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে। চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর, থানার গাড়ি রাখার গ্যারেজ ভাঙচুর করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, থানায় আক্রমণের সময় থানা ক্যাম্পাসে পাঁচটি মোটরসাইকেল ও দুটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।
হারাগাছ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম ফিরোজ বলেন, মৃত তাজুলের নামে কাউনিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা রয়েছে। তাঁর নামে ওয়ারেন্ট ছিল। কয়েক মাস আগে তাঁকে মাদকসহ আটক করা হয়েছিল।
পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তির কাছে তিন পোঁটলা হেরোইন পাওয়া গেছে। পুলিশ দেখে তিনি দৌড় দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।