রংপুরে সংযোগ সড়ক ভেঙে ভোগান্তি
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ১২টি মহল্লার মানুষকে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে শহরে যেতে হচ্ছে।
রংপুর নগরে হোসেননগর এলাকায় সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় লোকজন। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে তাদের পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে শহরে যেতে হচ্ছে। স্থানীয় উদ্যোগে সেতুর এক পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে হেঁটে চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক রাতের স্মরণকালের বর্ষণে রংপুর নগর পানিতে তলিয়ে যায়। ৪৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়। আবহাওয়া অফিসের হিসাবে ৭০ বছরের বৃষ্টিপাতের তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি। পরদিন ২৭ সেপ্টেম্বর নগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে হোসেননগর এলাকায় প্রবল স্রোতে একটি পাকা সেতুর এক পাশে প্রায় ৩০ ফুট ভেঙে পড়ে। সেতুটির ওপর দিয়ে দুই দিকের ১২টি এলাকার কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। প্রতিদিন রংপুর শহর ও পায়রাবন্দ এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটার জন্য চলাচলে সেতুটি ছিল একমাত্র ভরসা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, ওই এলাকা দিয়ে প্রবাহিত ঘাঘট নদের ওপর সেতুটি ২০১২ সালে নির্মাণ করা হয়। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
প্রবল স্রোতে সেতুর দক্ষিণ দিকের সংযোগ সড়কের ৩০ ফুট অংশ ভেঙে গেছে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম বলেন, সেতুটির ওপর দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে। এখন তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। অনেক দূরের পথ ঘুরে যানবাহন চলাচল করছে।
গতকাল বুধবার গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেতুটি ভেঙে পড়ায় রংপুর শহরের সঙ্গে ১২টি মহল্লার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন অটোরিকশাসহ অন্য যানবাহনের পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে দমদমা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয় উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে মূল সেতুর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এর ওপর দিয়ে কোনোরকমে এক চাকার যানবাহন যেতে পারবে। গতকালই সাঁকোর কাজ শেষ হয়েছে।
মেকুড়া এলাকার বাসিন্দা ওষুধ ব্যবসায়ী ইউনুস আলী প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে পায়রাবন্দ বাজারে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল নিয়ে অনেক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।
হোসেননগরের বাসিন্দা শিক্ষক শাহাজাহান মিয়া বলেন, ‘সবাই মিলে সেতুর সংযোগ রক্ষার জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করছি। কিন্তু এটির ওপর দিয়ে যানবাহন চলবে না। পাঁচ-ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।’
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর রংপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল হক বলেন, সেতুর সংযোগ সড়কের ভাঙা অংশ নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।