যুবলীগের বিরুদ্ধে লঞ্চ আটকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

উপজেলার কালাইয়া ঘাটে এমভি বন্ধন-৫ ও ঈগল-৪ নামের লঞ্চ থেকে চাঁদা হিসেবে ৪০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।

পটুয়াখালী বাউফল উপজেলায় ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়ার নামে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। গতকাল রোববার ও গত শনিবার দুটি লঞ্চ থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা ৪০ হাজার টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় একটি লঞ্চ সোয়া এক ঘণ্টা আটকে রেখেছিলেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, যুব ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ঘাটে এমভি বন্ধন-৫ ও ঈগল-৪ নামের লঞ্চ থেকে চাঁদা হিসেবে ৪০ হাজার টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোটেশন পদ্ধতিতে প্রতিদিন ওই ঘাট থেকে একটি লঞ্চ বিকেল চারটায় ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যায়।

দলীয়, স্থানীয় বাসিন্দা ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাউফল উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মনির মোল্লা ও ইউপি সদস্যদের ২৮ ডিসেম্বর বিকেলে গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে। স্থানীয় ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ মাঠে ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে প্রত্যেক লঞ্চে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা ধার্য করেছেন চেয়ারম্যান মনির ও তাঁর লোকজন। ইতিমধ্যে বন্ধন-৫ ও ঈগল-৪ থেকে ২০ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে।

কালাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কবিরুজ্জামান বলেন, কালাইয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ওই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। লঞ্চ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

লঞ্চ মালিকপক্ষের একজন বলেন, গত শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ঈগল-৪ লঞ্চটি ঢাকা থেকে বাউফলের কালাইয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। গতকাল রোববার সকালে লঞ্চটি কালাইয়া ঘাটে পৌঁছায়। গতকাল ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ২০-১৫ জন নেতা–কর্মী লঞ্চটিতে উঠে চাঁদা দাবি করেন। তাঁরা এ সময় লঞ্চের কর্মচারীদের বলেন, ‘গতকাল বন্ধন-৫ লঞ্চ টাকা দিতে দেরি করায় আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তারা ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর ঘাট থেকে লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে। আপনারা ২০ হাজার টাকা দিলে যথাসময়ে ছেড়ে যেতে পারবেন।’ এরপর ঈগল-৪ কর্তৃপক্ষ ২০ হাজার টাকা দিয়ে লঞ্চ ছাড়ার অনুমতি পান।

ঈগল-৪ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. মালেক বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মনিরের পাঠানো লোকজনের কাছে তাঁরা ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এরপর কালাইয়া ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়েছেন।

এর আগে শনিবার বিকেলে বন্ধন-৫ লঞ্চ থেকে চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সোয়া এক ঘণ্টা ঘাটে আটকে রাখা হয়। একপর্যায়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান মনিরের সঙ্গে কথা বলে ২০ হাজার টাকায় রফা করে। শনিবার লঞ্চটি সোয়া পাঁচটার দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।