যশোরে পরীক্ষার শুরুর চার দিনের মাথায় প্রথম করোনা শনাক্ত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে ২৪ ঘণ্টায় ৬০টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারজন চিকিৎসক ও দুজন স্বাস্থ্য কর্মী। যশোরে করোনা পরীক্ষা শুরুর চতুর্থ দিন মঙ্গলবার এসব করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। আগের তিন দিনে ২০৯টি নমুনা পরীক্ষা হলেও করোনা শনাক্ত করতে পারেনি তারা।
যশোর ও নড়াইল সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনাক্ত হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যশোরের ৪, নড়াইলের ৫, কুষ্টিয়ার ২ এবং মাগুরা ও মেহেরপুরের একজন করে। নড়াইলের আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনই লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক; অপরজন সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মী। এ ছাড়া যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভারত-ফেরত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার কাজে নিয়োজিত একজন স্বাস্থ্য কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন। সবাইকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়েছে।
যশোর জেলায় এ পর্যন্ত পাঁচজনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রামন শনাক্ত হয়েছে। ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলার চূড়ামনকাঠি, চৌগাছা পৌর এলাকার ৮ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড ও শার্শা উপজেলার ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কমিউনিটি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আছেন। এর আগে মনিরামপুর উপজেলায় আরেকজন স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তিনিও বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের ছয় জেলা থেকে ৬৫ জনের নমুনা পাঠানো হয়। তার মধ্যে ৬০টি নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্ত ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যে বেশির ভাগেরই করোনার উপসর্গ ছিল না বলে জানান তিনি।
নড়াইলের সিভিল সার্জন মো. আবদুল মোমেন বলেন, জেলায় নতুন শনাক্ত সবাই লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। পাঁচজনেরই শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। এ জন্য তাঁদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত শনিবার থেকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। চার দিনে ২৮১টি নমুনা সেখানে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১২টি নমুনা বাতিল হয়েছে। প্রথম তিন দিনে পাঠানো ২০৯টি নমুনার মধ্যে একজনও করোনা 'পজেটিভ' হয়নি। এ কারণে পরীক্ষার কার্যকরিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জেনোম সেন্টারের পরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে বলেন, 'করোনা ভাইরাস পরীক্ষার তিনটি ধাপ রয়েছে। নমুনা সংগ্রহ, ভাইরাস থেকে জিনোম (আরএনএ) পৃথককরণ ও পিসিআর যন্ত্রে পরীক্ষা। কোন একটা ধাপে ক্রটি থাকলেই ফল বদলে যেতে পারে। আমরা যেসব নমুনা পাচ্ছি সেখানে কিছু কিছু ত্রুটি থাকছে। একেক জায়গা থেকে একেক ধরনের টিউবে নমুনা পাঠানো হচ্ছে। তাই ফলাফলে তারতম্য হতে পারে। তবে আমরা আগের তিনদিনের নমুনা থেকে পুনরায় পরীক্ষা করে বিষয়টি যাচাই করে দেখব।'