মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে গুলি, ১০ বছর পর পুলিশের ১৬ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

১০ বছর আগে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে পায়ে গুলির অভিযোগে যশোর কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মামলাটি করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর বাবা বাবু শিকদার। তিনি যশোর শহরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সড়কের বাসিন্দা।

বাদীর আইনজীবী তানজিন নূর পূর্বাশা বলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি গ্রহণ করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আসামিরা হলেন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম, তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম, চাঁচড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) জামাল উদ্দিন, শহর উপপরিদর্শক (টিএসআই) রফিকুল ইসলাম, এসআই মাসুদুর রহমান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, এটিএসআই আবু বক্কর সিদ্দিকি, পুলিশ কনস্টেবল খাইরুল ইসলাম প্রমুখ।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সালমান সিকদার ওরফে ভিকি তাঁর বাবার ব্যবসায় সাহায্য করতেন। ২০১৪ সালের ১৫ জুন বিকেলে সালমান তাঁর বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ছিলেন। এ সময় এসআই জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সালমানকে আটক করে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় সালমানের বাবা বাবু শিকদারকে চাঁচড়া ফাঁড়িতে আসতে বলে পুলিশ। বাদী দ্রুত ফাঁড়িতে যান। এ সময় তাঁর সামনেই সালমানকে ব্যাপক মারধর করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখান অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা। এ সময় বাদীর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। ওই টাকা না দিলে সালমানকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হবে বলে জানান আসামিরা। বাদী হাত–পায়ে ধরে ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন। একপর্যায়ে তিনি ১০ লাখ টাকা ম্যানেজ করে আসামিদের হাতে দেন। এরপর বাকি ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে পুলিশ। আবারও ভয়ভীতি দেখানো হয়। টাকা না দেওয়ায় তাঁর ছেলেকে আবার নিয়ে যান তাঁরা। এরপর রাত ১০টার পর চাঁচড়া কবরস্থানের পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সালমানকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। সালমানকে প্রথমে যশোর জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সালমানের বাঁ পা কেটে বাদ দিতে হয়। এর পর থেকেই সালমান পঙ্গু হয়ে যান।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সালমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক দুটি মামলা দিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে বাদী কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে তাঁকেও ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। সরকার পতনের পর পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় ঘটনার ১০ বছর পর তিনি আদালতে এই অভিযোগ দাখিল করেন।