মালিকসহ দায়ীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক সমাবেশ

রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকদের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি, নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণের দাবিতে সমাবেশ করেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে
প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি এবং এ ঘটনায় শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে সমাবেশ করেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা। শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শ্রমিকেরা কারখানায় সেদিনের অগ্নিকাণ্ডের দায়ী মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।

সংগঠনের জেলা শাখার অন্যতম নেতা ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সভাপতি আলী আসগরের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা মন্টু ঘোষ, জেলা সিপিবি সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জেলার সভাপতি আবু নাঈম, সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, বিমল কান্তি দাস। সমাবেশে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও নিখোঁজ পরিবারের সদস্যদের অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

শ্রমিকেরা আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী নিহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ এবং আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা–পুনর্বাসনের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় আগুনে পুড়ে কমপক্ষে ৫১ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর কারখানার মালিকসহ আটজন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন। পরে মালিক, তাঁর চার সন্তানসহ কারখানার কর্মকর্তারা জামিনে কারামুক্ত হন। নিহত শ্রমিকদের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করে মাত্র দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণের এই পরিমাণ খুবই অপ্রতুল। এখনো অনেক শ্রমিক নিখোঁজ। সম্প্রতি ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে তিনটি মাথার খুলি, হাড় ও চুল পাওয়া গেছে। ফায়ার ব্রিগেড ও প্রশাসন সেখানে কী উদ্ধার তৎপরতা চালাল যে ঘটনার দুই মাস পরও মৃতদেহের অংশ পাওয়া যাচ্ছে।

শ্রমিকনেতারা বলেন, শ্রমিক ফেডারেশনগুলোর দাবি ছিল, আইএলও কনভেনশনের ১২১ ধারা অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান করা এবং এই ঘটনার জন্য দায়ী মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। জেলা প্রশাসনের তদন্তেও বের হয়ে এসেছে, এ ঘটনায় মালিক ও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরের দায় আছে। শ্রমিকনেতারা এটাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেন। মামলার ফাঁকফোকরে যেন মালিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রক্ষা না পান, সে জন্য সরকারের কাছে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।