মারা গেল দুজন, তিনজনকে বাঁচানোর আকুতি বাবার

নবজাতক
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ায় একসঙ্গে জন্ম নেওয়া পাঁচ সন্তানের মধ্যে দুজন মারা গেছে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের স্ক্যানু ওয়ার্ডে সকাল ১০টায় ও বেলা ২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। বাকি তিনজনের অবস্থাও সংকটাপন্ন। হাসপাতালের স্ক্যানু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নার্স নিলুফা খাতুন প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশুদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। উন্নত চিকিৎসা না পেলে তাদেরও বাঁচানো বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তবে মায়ের অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন সাদিয়া খাতুন (২৪)। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পান্টি গ্রামের বাসিন্দা সোহেল রানার (২৫) স্ত্রী। সোহেল একজন চা–দোকানি বলে চিকিৎসকেরা জানান।

জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) এস এম নাজিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শিশুদের ওজন খুবই কম। এ কারণে তাদের বেঁচে থাকা খুবই কঠিন। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা এ হাসপাতালে নেই। ঢাকায় নিয়ে আইসিইউ সাপোর্টে রাখতে পারলে হয়তো তাদের বাঁচানো যেতে পারে। কিন্তু শিশুদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। এ পরিবারের এখন আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

শিশুদের বাবা সোহেল রানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ও তাঁর স্ত্রী প্রথমবারের মতো বাবা–মা হলেন। চায়ের দোকান চালিয়ে কোনো রকমে তাঁদের সংসার চলে। শিশুদের উন্নত চিকিৎসা করানোর মতো টাকা তাঁর নেই। আল্লাহর ওপর এখন তিনি সব কিছু ছেড়ে দিয়েছেন।

কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে পাচ শিশুর চিকিৎসার জন্য ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে শিশুদের বাবার কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে। তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। জেলহত্যা দিবসে প্রাণ বাঁচাতে সামান্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

২০১৬ সালে সোহেল রানার বিয়ে হয়। চলতি বছর তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হন। ঝিনাইদহে একজন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতেন তিনি। গত সোমবার রাতে তাঁর স্ত্রীর প্রসবব্যথা শুরু হলে তাঁকে দ্রুত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় একসঙ্গে তাঁদের পাঁচ সন্তানের জন্ম হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে একসঙ্গে পাঁচ শিশুর জন্ম নেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।