মা–বাবার কবরের পাশে শেষশয্যায় সাংসদ আলী আশরাফ
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ মো. আলী আশরাফকে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও চোখের জলে চিরবিদায় জানাল চান্দিনার মানুষেরা। আজ শনিবার বাদ আসর জানাজা শেষে বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে তাঁকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার গল্লাই গ্রামে মা-বাবার কবরের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। এ সময় কয়েক হাজার নেতা-কর্মী কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আলী আশরাফ মারা যান। এরপর শুক্রবার বাদ এশা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে প্রথম জানাজা হয়। সেখানে তাঁর কফিনে রাষ্ট্রপতির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল ছালাউদ্দিন বীর প্রতীক, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিবুর রহমান, জাতীয় সংসদের স্পিকারের পক্ষে এম এম নাইমুর রহমান, আওয়ামী লীগের পক্ষে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
শনিবার বেলা ১১টায় চান্দিনা মহিলা কলেজ মাঠ, বাদ জোহর দোল্লাই নবাবপুর আহসান উল্লাহ উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও বাদ আসর গল্লাই ইসমাইল দাখিল মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
চান্দিনা মহিলা কলেজ মাঠে জানাজায় অংশ নেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদ, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী প্রমুখ।
সাংসদের ছেলে ও চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ বাবার জন্য সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘আমার বাবা ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ১০টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি চান্দিনার মানুষকে বড় বেশি ভালোবাসতেন। তাঁকে আপনারা ক্ষমা করে দেবেন।’
মো. আলী আশরাফ চান্দিনা থেকে পাঁচবার সাংসদ নির্বাচিত হন। চারবার আওয়ামী লীগ থেকে, একবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ১৯৭০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০টি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ২০০০ সালে কিছুদিন ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদকও ছিলেন তিনি। তিনি মৃত্যুর আগপর্যন্ত কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।