২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মানিকপুরে মা–বাবার পাশে শায়িত হবেন মওদুদ আহমদ

মওদুদ আহমদ
ফাইল ছবি

শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামে মা–বাবার পাশে শায়িত হবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মানিকপুর গ্রামের বাড়িতে ষষ্ঠ ও শেষ জানাজা শেষে তাঁকে সেখানে দাফন করা হবে।

প্রয়াত মওদুদ আহমদের ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে আজ শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে মওদুদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় জানাজা শেষে হেলিকপ্টারযোগে মওদুদ আহমদের মরদেহ নোয়াখালী নিয়ে আসা হবে। এখানে জুমার নামাজের পর মওদুদ আহমদের নির্বাচনী এলাকার কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠে চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর পঞ্চম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে কোম্পানীগঞ্জের সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে। এরপর ষষ্ঠ ও শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে মওদুদ আহমদের জন্মস্থান কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামের বাড়িতে।

এদিকে নোয়াখালীর কৃতী সন্তান মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে গোটা নোয়াখালীর বাসিন্দারা শোকাতুর। দলমত–নির্বিশেষে সব শ্রেণি–পেশার মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জেলার প্রবীণ এই রাজনীতিক ও আইনজ্ঞের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন। তাঁরা মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। মৃত্যুর খবর প্রকাশ হওয়ার পর দলের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পদভারে ভারী হয়ে উঠেছে মওদুদ আহমদের জন্মস্থান মানিকপুর গ্রাম।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে দলের নেতা-কর্মীরা সবাই শোকাহত। তিনি ছিলেন আমাদের সবার অভিভাবক। বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে রাখতেন আমাদের। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।’

মরদেহ নেওয়া হবে মওদুদ আহমদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুরে। শুক্রবার সকালে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায়।
ছবি: তানভীর আহম্মেদ

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট থেকেই মওদুদ আহমদ পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। মওদুদ আহমদের গ্রামের বাড়ির বাসভবন ‘হোয়াইট হাউসে’ কেউ থাকে না। মওদুদ আহমদ গ্রামের বাড়িতে এলে ওই বাসভবনেই অবস্থান করতেন। তাঁর পুরাতন বাড়িতে চাচাতো ভাইয়েরা বসবাস করেন। মৃত্যুর সংবাদে অনেক নেতা-কর্মী বাড়িতে ভিড় করছেন। সূত্র জানায়, দলমতনি–র্বিশেষে সবার কাছে একজন ভালো মানুষ ছিলেন মওদুদ আহমদ।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁকে আমরা কখনো প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে অশালীন উক্তি কিংবা কাউকে খারাপ কথা বলতে কখনো শুনিনি। মওদুদ আহমদের মৃত্যু দল হিসেবে বিএনপির জন্য বিরাট ক্ষতির।’

বসুরহাটে কালো পতাকা উত্তোলন

নোয়াখালীর সন্তান মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো কালো পতাকা উত্তোলন করেছেন। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার আহ্বানে সাড়া দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারও ব্যবসায়ীরা কালো পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। কাদের মির্জা ঘোষিত তিন দিনের শোকের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবারও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করেছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। বসুরহাট-সোনাপুর সড়কে ১৭ মার্চ বিকালে তোলা।
ছবি: প্রথম আলো

এর আগে গত বুধবার রাতে ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি বসুরহাট বাজারের ব্যবসায়ীদের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার কালো পতাকা উত্তোলন করার আহ্বান জানান। এ ছাড়া কাদের মির্জা নিজের উদ্যোগে মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বসুরহাট পৌরসভা ভবনের পাশে বসুরহাট-সোনাপুর সড়কে একটি তোরণ নির্মাণ করেছেন।