মাদ্রাসাছাত্রকে বেত্রাঘাত, পাঁচ দিনেও সন্ধান মেলেনি আদনানের

মো. আদনান সাহিল
ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটে বেত্রাঘাত করার পর থেকে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র মো. আদনান সাহিলের (১২) সন্ধান পাঁচ দিনেও মেলেনি। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে আদনান নিখোঁজ আছে।

নিখোঁজ আদনান সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে অবস্থিত তিস্তা আল জামিয়া ইসলামিয়া মডেল হেফজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চেতনা গ্রামের আবদুল হালিমের দ্বিতীয় ছেলে।

নিখোঁজের ঘটনায় আদনানের বাবা আবদুল হালিম গত রোববার লালমনিরহাট সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আদনানের পরিবারের ভাষ্য, নিখোঁজের পর শনিবার সন্ধ্যার দিকে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে মুঠোফোনে তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়। তাঁদের ধারণা, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আদনানকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে কিংবা কোথাও লুকিয়ে রেখেছে। মাদ্রাসার শিক্ষকের মাধ্যমে আদনানের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

মাদ্রাসার সুপার মো. মজিবর রহমান মঙ্গলবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিখোঁজ আদনানকে আমরাও খুঁজছি, কোথাও এখনো তার হদিস পাইনি। গত বুধবার রাতে আদনানের কাছে মুঠোফোন থাকা নিয়ে শাসনের একপর্যায়ে একজন নতুন শিক্ষক তাকে কয়েকটি বেত মারেন। এতে সে ভয় পেয়ে যায়। এরপর শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে তার আর কোনো খোঁজখবর নেই। আমরা তার বাবাকে বিষয়টি বলেছি।’

আবদুল হালিম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মাদ্রাসায় গত বুধবার রাতে শাসনের নামে মারপিট করা হয়েছিল। এরপর গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে সে নিখোঁজ, অথচ আমাকে ফোন করা হলো শনিবার সন্ধ্যায়। আমি রোববার লালমনিরহাট সদর থানায় জিডি করেছি। তাকে খুঁজে না পাওয়ায় আমাদের দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’

লালমনিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহা আলম বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার জন্য লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এসআই মিজানুর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র আদনানের ঘটনাটি তদন্ত করার পাশাপাশি তাকে খোঁজা হচ্ছে, তবে এখনো তার সন্ধান মেলেনি।

গোকুন্ডার তিস্তা বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে ১৯৯৯ সালের প্রতিষ্ঠিত হয় হজরত ফাতেমাতুজ্জহরা দাখিল মাদ্রাসা। পরে তা আল জামিয়া ইসলামিয়া মডেল হেফজুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা নামে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।