মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মচারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে যুবকের মৃত্যু
বরিশালে একটি মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সন্ধ্যায় নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী রেডিও স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে ।
মারা যাওয়া যুবকের নাম সুমন খান (৩৫)। তিনি নগরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের রূপাতলী রেডিও স্টেশন এলাকার সাত্তার খানের ছেলে। এ ঘটনায় ‘ড্রিম লাইফ’ নামের মাদক নিরাময়কেন্দ্রের পাঁচ কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। মাদক নিরাময়কেন্দ্রটি নগরের রূপাতলী এলাকায়।
সুমন কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বিভিন্ন অজুহাতে তিনি বাড়িতে স্বজনদের মারধর করতেন। এ কারণে তাঁকে আগেও ‘ড্রিম লাইফ’ নামের মাদক নিরাময়কেন্দ্রে রাখা হয়।
সুমনের পারিবারিক সূত্র জানায়, সুমন কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বিভিন্ন অজুহাতে তিনি বাড়িতে স্বজনদের মারধর করতেন। এ কারণে তাঁকে আগেও ‘ড্রিম লাইফ’ নামের মাদক নিরাময়কেন্দ্রে রাখা হয়। দেড় মাস আগে তাঁকে বাড়িতে আনা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে সুমন আবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। বিষয়টি সুমনের অপর দুই ভাই সুলতান ও রুম্মান মাদক নিরাময়কেন্দ্রকে জানায়। বুধবার সন্ধ্যায় মাদক নিরাময় কেন্দ্রের ৬-৭ জন কর্মচারী এসে সুমনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের বাড়িতে আসেন।
সুমনের মা খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, পরিবারকে না জানিয়ে সুমনকে ধরে নিয়ে যেতে উদ্যত হন মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারীরা। একপর্যায়ে মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারীরা সুমনকে ঘর থেকে বের করে মাটিতে উপুড় করে ফেলে দেন। এরপর তাঁরা তাঁকে মাটিতে চেপে ধরে স্বজনদের কাছে গামছা ও রশি চান তাঁকে বাঁধার জন্য। পরে সুমন নিস্তেজ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তড়িঘড়ি করে তাঁরা সুমনকে একটি অটোরিকশায় ওঠান। কিন্তু ওই সময় তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে স্বজনেরা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারকে না জানিয়ে সুমনকে ধরে নিয়ে যেতে উদ্যত হন মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারীরা। একপর্যায়ে মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারীরা সুমনকে ঘর থেকে বের করে মাটিতে উপুড় করে ফেলে দেন। এরপর তাঁরা তাঁকে মাটিতে চেপে ধরে স্বজনদের কাছে গামছা ও রশি চান তাঁকে বাঁধার জন্য। পরে সুমন নিস্তেজ হয়ে পড়ে।খাদিজা বেগম, নিহত সুমনের মা
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সুমনকে অটোরিকশায় তোলার সময় তাঁর কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে তাঁরা ছুটে আসেন। এ সময় মাদক নিরাময় কেন্দ্রের কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন তাঁদের আটক করে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারী উজ্জ্বল সমাদ্দার, মো. রায়হান, ফজলে রাব্বি, বায়েজিদ হোসেন ও আবুল কালামকে আটক করে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এ আর মুকুল বলেন, এ বিষয়ে ‘ড্রিম লাইফ’ নামের ওই মাদক নিরাময়কেন্দ্রের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছে। পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছ থেকেও বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য নেওয়া হচ্ছে। পুরো বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রটির পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে সুমনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।