মসজিদে বিস্ফোরণে তিতাস গ্যাসকে দুষছেন এলাকাবাসী
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড আগে থেকে উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না।
শুক্রবার রাতে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিকভাবে জানায়, তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনের লিকেজের ফলে জমে থাকা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। একাধিক মুসল্লি শনিবার প্রথম আলোর কাছে বলেন, তাঁরা মসজিদে নামাজ আদায় করতে গেলে গ্যাসের গন্ধ পেতেন। এক মাসের বেশি সময় ধরে গ্যাসের এই লিকেজের সমস্যা চলছে।
গ্যাস লিকেজের বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটি অবহেলা করেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, টানা বৃষ্টির পর থেকে গ্যাসের বুদ বুদ দেখা দেয়। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মসজিদ কমিটিও বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি।
পশ্চিম তল্লা এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সোহেল শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে থেকেই মসজিদের ভেতরে গ্যাসের গন্ধ পেতাম। এসি চালানোর কারণে মসজিদের দরজা-জানালা বন্ধ থাকত। ভেতরে গ্যাস জমে গিয়েছিল।’
ফায়ার সার্ভিস নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের লিকেজ থেকে মসজিদে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। মসজিদের ভেতরে গ্যাস ভরে থাকায় বিদ্যুতের স্ফুলিঙ্গ থেকে মুহূর্তে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। এখানে এসি থেকে কোনো বিস্ফোরণ ঘটেনি। মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগের বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের লিকেজের অভিযোগ পেয়ে তাদের একটি দল কাজ করছে। এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সপ্তাহখানেক আগে গ্যাস লিকেজের বিষয়টি তাঁরা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের ঠিকাদারকে জানান। তখন ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। টাকা জোগাড় করার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেলআবদুল গফুর, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য
মসজিদ কমিটির অবহেলার অভিযোগ প্রসঙ্গে কমিটির সভাপতি ও ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল গফুর প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সপ্তাহখানেক আগে গ্যাস লিকেজের বিষয়টি তাঁরা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের ঠিকাদারকে জানান। তখন ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। টাকা জোগাড় করার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেল।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি দুর্ঘটনা। তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি জানা যাবে। সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিট ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে।’