মরদেহটি এতটাই পুড়ে গেছে যে চেনার উপায় নেই
১৫ থেকে ২০ বর্গফুট এলাকাজুড়ে পোড়া পাতার ছাই। তার মধ্যে উপুড় হয়ে পড়ে ছিল পুড়ে যাওয়া একজনের দেহাবশেষ। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখনো ধোঁয়া উড়ছিল। তবে মরদেহটি এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে দেখে শনাক্ত করার উপায় নেই। নিহত ব্যক্তি একজন পুরুষ, এ তথ্য ছাড়া কিছু সম্পর্কেই নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে মাগুরা সদর উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নের দারিয়াপুর মধ্যপাড়া নবগঙ্গা নদীর তীরে একটি শ্মশানঘাটের পাশে। গতকাল সোমবার লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে ঘটনাস্থলের আলামতের পাশাপাশি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
মাগুরা সদর থানার পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গতকাল সকাল নয়টার দিকে স্থানীয় লোকজন আগুনে দগ্ধ লাশটি দেখে পুলিশকে খবর দেয়। দুপুরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা মাগুরা সদর থানার পরিদর্শক আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পেয়েছে, প্রায় ১৫ বর্গফুট নিয়ে পোড়া ছাইয়ের মধ্যে লাশটি উপুড় হয়ে পড়ে ছিল। মরদেহের মাথা ও বুকের অংশ ছাড়া বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গেছে। সকালে পুলিশ পৌঁছানোর পরও ওই এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়ছিল। তাই ধারণা করা হচ্ছে, রোববার রাতের কোনো এক সময় ওই ব্যক্তিকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি ও পিবিআই ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নবগঙ্গা নদীর পাড়ে একটি নির্জন জায়গায় এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, এলাকাটি জনবসতি থেকে একটু দূরে ও নির্জন হওয়ায় এখানে দিনের বেলাতেও মাদক ও জুয়ার আড্ডা বসে। তবে এই ঘটনা কীভাবে, কারা ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে। মামলাটি তদন্ত করছেন পুলিশ পরিদর্শক এ বি এম দোহা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে এক জোড়া স্যান্ডেল, তাস ও নিহত ব্যক্তির জামার কিছু অংশ জব্দ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি ভাঙা মোবাইল পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নানা রকম প্রশ্ন ও ধারণা সামনে রেখে প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত চলছে। তবে উপসংহারে না পৌঁছানো পর্যন্ত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।