ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় থমকে আছে চার লেন মহাসড়কের কাজ
সিরাজগঞ্জে ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত জটিলতায় থমকে আছে চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ। দীর্ঘ আড়াই বছরেও কাজটি শেষ না হওয়ায় হতাশ জেলাবাসী। সরকারের ভূমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত নতুন প্রজ্ঞাপন জারির ফলে মহাসড়কটিতে ভূমি অধিগ্রহণে বরাদ্দের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে। এতে থমকে গেছে মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ।
অতিরিক্ত অর্থ দ্রুত বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিরাজগঞ্জের সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ।
সওজ সিরাজগঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পারে সয়দাবাদ মুলিবাড়ি মোড় থেকে সিরাজগঞ্জ পৌর শহর হয়ে নলকা মহাসড়ক পর্যন্ত দুই ও চার লেন মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে সড়ক বিভাগ। ২৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রকল্পটিতে ৭ কিলোমিটার করে দুই লেন। একই সঙ্গে শহরের কাটা ওয়াপদা এলাকা থেকে চণ্ডীদাশ গাঁতি পর্যন্ত ৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পটির কাজ গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রকল্পটিতে দুই লেনের কাজ প্রায় শেষ হলেও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় শহরের বাজার স্টেশন এলাকার স্বাধীনতা স্কয়ার থেকে সার্কিট হাউস, মালশাপাড়া কাটা ওয়াপদা থেকে চাঁদ আলী মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার চার লেন মহাসড়ক তৈরির কাজ আটকে আছে। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঘিরে যে চার লেন মহাসড়কটি নির্মাণ হয়েছে, তাতে দেখা যায়, বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই দায়সারাভাবে কাজ হয়েছে।
পৌর শহরের বাজার স্টেশন এলাকার ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, চার লেন মহাসড়কটির কাজ দীর্ঘদিন চলমান থাকায় মাঝেমধ্যেই সড়কটিতে যানজট সৃষ্টি হয়। আবার কাজ শেষ না হওয়ায় মাঝেমধ্যেই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে।
মাছুমপুর মহল্লার আবদুস সবুর বলেন, ‘মহাসড়কটি আদৌ হবে কি না, বিষয়টি নিয়ে আমরা শঙ্কায় আছি। আমরা এ মহাসড়কের কাজটি নিয়ে বড় আশায় ছিলাম। এখন দীর্ঘদিনেও কাজ শেষ না হওয়ায় হতাশ হচ্ছি।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তুর্না এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আজাদুর রহমান জানান, ‘ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতায় আমরা সঠিকভাবে সঠিক সময়ে কাজ করতে পারছি না। প্রায় দেড় বছর হলো প্রকল্পটি শেষ করা যাচ্ছে না। এতে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে।’
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) চৌধুরী মোহাম্মাদ গোলাম রাব্বি জানান, ‘সওজ ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মোট ৬৭ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। এখনো প্রায় ৭৮ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বাকি টাকা না পেলে আমরা ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না।’
সওজ সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, ২০১৭ সালের ভূমি অধিগ্রহণ আইনটিতে সংশোধন করে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ দেড়গুণ থেকে বাড়িয়ে তিন গুণ করা হয়। এতে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে। চার মাস আগে প্রকল্পটিতে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য নতুন বরাদ্দ পাঠানো হয়েছে। যেটি বর্তমানে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। বরাদ্দটি পেলেই কাজ শুরু করা হবে।