ভিজিএফের বস্তা বদলাতে গিয়ে...
পঞ্চগড়ে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের তালমা বাজারসংলগ্ন দুটি গুদাম থেকে সরকারি সিলযুক্ত ২৯ বস্তা ভিজিএফের চাল জব্দ করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় দুই চাল ব্যবসায়ী ও এক ভ্যানচালককে আটক করা হলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আজ হাফিজাবাদ ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ওই ইউনিয়নের ৩ হাজার ৪০০ জন সুফলভোগীর মধ্যে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফের ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। প্রতি তিনজনকে দেওয়া হয় ৩০ কেজি ওজনের একটি বস্তা।
বিকেলে তালমা বাজারসংলগ্ন মোজাম্মেল হোসেন নামের এক ব্যক্তির গুদামের সামনে আবদুর রহিম ও আবদুর রহমান নামের স্থানীয় দুই ব্যবসায়ী আবুল ফজল নামের এক ভ্যানচালককে নিয়ে সরকারি সিলযুক্ত ভিজিএফের চাল অন্য বস্তায় বদল করছিলেন। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাঁরা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনকে খবর দেন।
খবর পেয়ে পরে পুলিশসহ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সেখান থেকে ২২ বস্তা চাল উদ্ধার করেন। এ সময় সেখানে আবদুর রহিম ও আবদুর রহমান নামের দুই ব্যবসায়ী ও আবুল ফজল নামের এক ভ্যানচালককে আটক করেন। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তালমা বাজারে আবদুর রহিমের গুদাম থেকে আরও সাত বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, ‘আমরা সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের বাইরে ২২ বস্তা (প্রথমে জব্দ করা) চাল কিনেছি। চালগুলো সরকারি বস্তায় ছিল, এ জন্য একজনের গুদামে নিয়ে বস্তাগুলো বদলানো শুরু করি। কেউ যদি আমাদের কাছে চাল বিক্রি করেন, তাহলে আমরা ব্যবসায়ী হিসেবে কিনবই।’ তবে পরে তাঁর গুদামে পাওয়া যাওয়া ৭ বস্তা চাল সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। বলেন, তাঁর গুদাম খোলা ছিল। কে রেখে গেছে তিনি জানেন না।
হাফিজাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম মুসা কলিমুল্লা প্রধান বলেন, ‘আমরা ইউপি সদস্যদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী সকাল থেকে সুষ্ঠুভাবে চাল বিতরণ করেছি। ইউপি চত্বরে চাল নিয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হয়নি। তবে বাইরে কে কার কাছে চাল বিক্রি করেছেন, তার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফ হোসেন বলেন, ২৯ বস্তা চাল জব্দ করে ইউপির একটি কক্ষে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন তাঁরা চালগুলো কিনে নিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আমিনুল ইাসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।