ভাসানচর থেকে পালানো শিশুসহ আট রোহিঙ্গা আটক
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসা শিশুসহ আট রোহিঙ্গাকে আটক করেছেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চর চান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চর চান্দিয়া এলাকার লোকজন। গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকা থেকে তাঁদের আটক করা হয়। পরে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মো. আবছার (১৭), মো. জাফর আলম (১৬), সৈয়দ হোসেন (২৫), তাঁর শিশুপুত্র মো. ইলিয়াস (৭), মো. ফারুক (১৬), ইয়াসিন আরাফাত (১২), কামাল সাদেক (১৪) ও নুর মোহম্মদ (১৮)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে দক্ষিণ চর চান্দিয়া আঞ্চলিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকায় নদী থেকে শিশুসহ আটজন হেঁটে আসেন। তাঁদের দেখে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে তাঁরা রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন এবং ভাসানচর থেকে পালিয়ে এসেছেন বলে জানান। পরে বিষয়টি থানায় জানানো হয়। থানা থেকে উপপরিদর্শক (এসআই) মোবারক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের দল গেলে আটক রোহিঙ্গাদের হস্তান্তর করা হয়।
বেড়ানো শেষে সোমবার ভোরে ভাসানচর থেকে একটি ট্রলারে করে বাপ-ছেলে কুতুপালং এবং অন্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজের খোঁজে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আটক রোহিঙ্গা সৈয়দ হোসেন বলেন, তাঁরা টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকেন। তাঁর শাশুড়ি, শ্বশুরসহ বেশ কয়েকজন আত্মীয় নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছেন। তাঁর ছোট ছেলে ইলিয়াছের আবদার মেটাতে কুতুপালং ক্যাম্পে স্ত্রী ও অপর সন্তানদের রেখে গত কয়েক দিন আগে গোপনে তাঁরা ভাসানচরে যান। এ সময় কুতুপালং ক্যাম্পের আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা তাঁদের সঙ্গে ভাসানচরে যান। বেড়ানো শেষে সোমবার ভোরে ভাসানচর থেকে একটি ট্রলারে করে তাঁরা বাপ-ছেলে কুতুপালং এবং অন্যরা দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজের খোঁজে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
সৈয়দ হোসেন বলেন, মাঝপথে ট্রলারচালক তাঁদের কুতুপালং না পৌঁছে দিয়ে সোনাগাজী উপজেলার বড় ফেনী নদীর তীরে নামিয়ে দিয়ে টাকাপয়সা নিয়ে চলে যান। এরপর তাঁরা পথ ভুলে হেঁটে চর চান্দিয়া এলাকায় এসে হাঁটতে থাকেন। অপর রোহিঙ্গারাও কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানান। তবে তাঁরা পালিয়ে কোথায় যাচ্ছিলেন তা তিনি বলতে পারেননি।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ হোসেন শিশুসহ আট রোহিঙ্গা আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আটক রোহিঙ্গাদের থানায় এনে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। তাঁরা সবাই টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। বাবা-ছেলে দুজন সেখান থকে গোপনে ভাসানচরে আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। অন্যরা কুতুপালং ক্যাম্পের বাসিন্দা হলেও তাঁরা কাজের খোঁজে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে প্রথমে ভাসানচরে এবং পরে সেখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
ওসি বলেন, কুতুপালং ক্যাম্প ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সোমবার রাতে তাঁদের পুলিশের তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ গাড়িতে করে টেকনাফের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।