ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়নের ডাকঘর ভবনটি প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো। ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ভবনের ছাদ ও দেয়াল ধসে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। কোন্ডা ডাকঘরটির কার্যক্রম ১৯৬০ সালে একতলা পাকা ভবনে শুরু হয়। এরপর থেকে আর ভবনটির সংস্কার হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, এ ডাকঘরে কর্মরত পোস্টমাস্টার মোহাম্মদ খলিলুর রহমান একটি ভাঙা কাঠের চেয়ারে বসে আছেন। ড্রয়ারবিহীন ভাঙা টেবিলে ওজন মাপার যন্ত্র রাখা রয়েছে। ভবনের ছাদ ও দেয়াল ফাটল ধরা। দেয়াল থেকে গাছের শিকড় গজিয়েছে। দেয়াল থেকে বালু ও আস্তরণ খসে পড়ছে। ঘরের মেঝেতে কয়েক জায়গায় মাটির স্তূপ জমে আছে। ডাকঘরের চিঠিসহ মূল্যবান মালামাল সংরক্ষিত রাখার সিন্দুকটি ভাঙা ও জরাজীর্ণ এবং ধুলাবালুতে জর্জরিত অবস্থায় পড়ে আছে।
এই ডাকঘর থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা, জাজিরা, বীরবাঘৈর, পানগাঁও, কাজিরগাঁও, কাওটাইল, ব্রাহ্মণগাঁও, বাক্তারচর, আলুকান্দা, ঘোষকান্দা গ্রামসহ আরও কয়েকটি গ্রামে চিঠি বিলি করা হয়।
এই ডাকঘর থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কোন্ডা, জাজিরা, বীরবাঘৈর, পানগাঁও, কাজিরগাঁও, কাওটাইল, ব্রাহ্মণগাঁও, বাক্তারচর, আলুকান্দা, ঘোষকান্দা গ্রামসহ আরও কয়েকটি গ্রামে চিঠি, পার্সেল, ডকুমেন্টসহ প্রয়োজনীয় পণ্য ও কাগজপত্র বিলি করা হয়।
পোস্টমাস্টার মোহাম্মদ খলিলুর রহমান জানান, ১৯৬০ সালে ডাকঘরটি চালু করা হয়। ২০০০ সালে পোস্টমাস্টার মহব্বত আলী মারা যাওয়ার পর প্রায় ৩১ বছর ধরে তিনি এখানে ইডিডিএ ও পোস্টমাস্টার পদে একাই কাজ করছেন। সকাল নয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ডাকঘরটি খোলা থাকে। নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ডাক গ্রহণ, চিঠি, ডকুমেন্টসহ অন্যান্য মালামাল গ্রহণের কাজ করা হয়। এরপর কোন্ডা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে চিঠি বিলি করে থাকেন।
পোস্টমাস্টার খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘২০০১ সালে ৪৫০ টাকা সম্মানীতে কাজে যোগদান করি। বর্তমানে ৪ হাজার ৩০০ টাকা সম্মানী ভাতা পাচ্ছি। এই ডাকঘরে আমি ছাড়া কেউ নেই। প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো পাকা ভবনটির দেয়াল ও ছাদে ফাটল ধরেছে। যেকোনো মুহূর্তে এটি ধসে যেতে পারে। এ ছাড়া বসার চেয়ার ও টেবিল ভাঙা। টেবিলের ড্রয়ার নেই। কাঠের ওপর চিঠিসহ অন্যান্য মালামাল রাখছি। এ নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। বিষয়টি নারায়ণগঞ্জের পোস্টমাস্টারকে একাধিকবার জানিয়েছি।’
নারায়ণগঞ্জ পশ্চিম উপবিভাগীয় পরিদর্শক মো. হজরত আলী বলেন, ‘আইনি জটিলতায় ডাকঘরটি সংস্কার বা পুনর্নির্মাণ করা যাচ্ছে না। কোন্ডা ডাকঘরটি মন্দিরের জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। তাই ডাকঘরটি সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। কেউ যদি ডাকঘরের নামে অন্তত ৩ শতাংশ জমি দান করেন, তবে সেখানে ডাকঘরের নতুন ভবন নির্মাণ বা উন্নয়ন করা যাবে।’ক