বড় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বন্দরের বহির্নোঙরে অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর এলাকায় বড় জাহাজ থেকে আমদানি পণ্য স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। গতকাল রোববার অন্তত ৩৪টি বড় জাহাজ থেকে পণ্য স্থানান্তর করা যায়নি। পণ্য স্থানান্তর করা সম্ভব না হওয়ায় কর্ণফুলী নদীতে গতকাল ৪১০টি লাইটার জাহাজ অলস বসেছিল।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ১৯০ মিটারের বেশি লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারে না। এসব জাহাজ বহির্নোঙরে নোঙর করে রাখা হয়। এরপর ছোট আকারের জাহাজ বা লাইটার জাহাজ ওই বড় জাহাজের পাশে রাখা হয়। এরপর ক্রেনের সাহায্যে বড় জাহাজ থেকে ছোট আকারের জাহাজে (লাইটার) পণ্য স্থানান্তর করা হয়। পরে ছোট জাহাজগুলোর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নদীপথে দেশের নানা স্থানে তা পরিবহন করা হয়।
বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে পণ্য স্থানান্তর করার আগে জাহাজের হ্যাচ (খোল) খুলে রাখা হয়। এ জন্য বৃষ্টির সময় পানি ভিজে পণ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়। আবার সাগর উত্তাল থাকলে ছোট আকারের জাহাজ ঢেউয়ের সঙ্গে দুলতে থাকে। ভারসাম্য না থাকলে পণ্য খালাস করা যায় না।
লাইটার জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি)–এর নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশীদ প্রথম আলোকে জানান, সাগর প্রচণ্ড উত্তাল। কোনো লাইটার জাহাজের সাগরে বড় জাহাজের কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে এসব ছোট নৌযান নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে কর্ণফুলী নদীতে নোঙর করে আছে।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, যেসব জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে না সেগুলোর মধ্যে ২৪টি সিমেন্ট শিল্পের কাঁচামাল ক্লিংকার রয়েছে। এ ছাড়া কাঁচা চিনি, লবণ, সার, খাদ্যশস্য, পাথর ও সরিষাসহ বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। সাধারণত সাগর উত্তাল না হলে বৃষ্টির সময় পাথর, পুরোনো লোহার টুকরার মতো পণ্য খালাস করা যেত। সেটিও এখন সম্ভব হচ্ছে না।
বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ছোট জাহাজে পণ্য খালাসে নিয়োজিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডেলিং অ্যান্ড বার্থ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি এ কে এম শামসুজ্জামান বলেন, কয়েক দিন ধরে সাগর উত্তাল। এ পরিস্থিতিতে পণ্য খালাস সম্ভব হচ্ছে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের গতকালের বুলেটিনে বলা হয়, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আগামী তিন দিন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।