বোরকা পরে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রী, শাশুড়িসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ
শেরপুরের শ্রীবরদীতে পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী, শাশুড়ি ও জেঠাশ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার খোশালপুর পুটল গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার ভোরে পুলিশ অভিযুক্ত মিন্টু মিয়াকে (৪০) আটক করেছে। তিনি উপজেলার গেড়ামারা গ্রামের হাইমউদ্দিনের ছেলে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে ও মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৫), মনু মিয়ার স্ত্রী শেফালী বেগম (৬০) ও মনু মিয়ার বড় ভাই হাজী মো. মাহমুদ (৭০)। আহত হয়েছেন মনু মিয়া (৬০), তাঁর ছেলে শাহাদাত হোসেন (২৫) ও হাজী মো. মাহমুদের স্ত্রী ফুল সাহারা বেগম (৬৫)। আহত ব্যক্তিদের জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৭ বছর আগে মনিরা বেগমের সঙ্গে মিন্টু মিয়ার বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মিন্টু মিয়ার সঙ্গে মনিরা বেগমের পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। কয়েক দিন আগে মনিরা রাগ করে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এরপর থেকে স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মিন্টু মিয়া। তবে মনিরা ফেরেননি।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মিন্টু মিয়া বোরকা পরে খোশালপুর পুটল গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানে গিয়েই মিন্টু তাঁর হাতে থাকা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে স্ত্রী মনিরা বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। মনু মিয়া, শেফালী বেগম, জেঠাশ্বশুর হাজী মো. মাহমুদসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ সময় স্বজনদের ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে শেফালী ও হাজী মো. মাহমুদকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। উন্নত চিকিৎসার জন্য মনু মিয়াকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. হাসান নাহিদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে মিন্টু মিয়া দা দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী, শাশুড়ি ও জেঠাশ্বশুরকে হত্যা করেছেন। আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার সময় এক নারী মিন্টু মিয়াকে চিনতে পেরেছেন। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে।
শ্রীবরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাইম বলেন, ঘটনার পরপরই মিন্টু মিয়া পালিয়ে যান। অভিযান চালিয়ে আজ শুক্রবার ভোরে মিন্টু মিয়াকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।