বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণ: আটক দুজনকে ‘নিরপরাধ’ দাবি করে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাঁদের নাম প্রকাশ করেনি। তবে আটক ওই তিন ব্যক্তির মধ্যে দুজন হরিজন সম্প্রদায়ের বলে তাঁদের পরিবার দাবি করেছে। এ ঘটনায় হরিজন সম্প্রদায়ের দুজনকে ‘নিরপরাধ’ দাবি করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়কে ময়লা ফেলে বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা।
হরিজন সম্প্রদায়ের দাবি অনুযায়ী, আটক ওই দুই ব্যক্তি হলেন খোকন জমাদ্দারের ছেলে জীবন জমাদ্দার (১৯) ও মৃত কৃষ্ণ জমাদ্দারের ছেলে অন্তর জমাদ্দার (২০)।
অন্তর জমাদ্দারের মা জয়া জমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে গতকাল বুধবার সকালে কাজে বের হয়ে রাত আটটায় বাসায় ফেরে। পরে বাসার কাছে র্যাকেট (ব্যাডমিন্টন) খেলে রাত ১০টায় বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে যায়। ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে পুলিশ এসে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার ছেলে কোনো অপরাধ করেনি। প্রভাবশালী লোকদের বাঁচাতে আমার ছেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আমার ছেলেকে ছেড়ে না দিলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
জীবন জমাদ্দারের মা গৌরী জমাদ্দার বলেন, তাঁর ছেলে সারা দিন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে রাতে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়েন। তাঁর নিরপরাধ ছেলেকে ঘুম থেকে উঠিয়ে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। তাঁর দাবি, স্থানীয়দের কাছে তাঁর ছেলের ব্যাপারে শুনলেও প্রমাণ পাওয়া যাবে, তিনি নিরপরাধ।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া রতন জমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেরা যদি কোনো অপরাধ করে তাহলে আমরা তাদের থানায় দিয়ে আসব। পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করুক। আমরা চাই, যাঁরা অপরাধ করেছেন তাঁরা শাস্তি পাক। কিন্তু আমাদের নিরপরাধ ছেলেদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে?’ তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে হরিজন সম্প্রদায়ের কেউ জড়িত নন। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাঁদের সম্প্রদায়ের যুবকদের আটক করা হয়েছে। তাঁদের ছেড়ে দেওয়া না হলে অবরোধ চলতে থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিহাদ আদনান তাইয়ানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোপালগঞ্জের এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ছাড়া যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁরা যদি দোষী প্রমাণিত না হন, তাহলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।