বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পেলেন সেই দাদি–নাতি
শেরপুরের নকলা উপজেলায় ভিক্ষা করে জীবন যাপন করা দাদি ও নাতিকে এবার সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার বই দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নকলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুর রহমান ও উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের বিধবা শহর বানুর বাড়িতে গিয়ে ভাতার বই তাঁর হাতে তুলে দেন।
বিধবা শহর বানু তাঁর সাত বছর বয়সী প্রতিবন্ধী নাতি আসাদুলকে নিয়ে ভিক্ষা করে জীবন যাপন করতেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু হিসেবে মো. আসাদুলকে সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ‘অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা’ এবং ওই শিশুর দাদি শহর বানুকে ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা’ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
গতকাল রাতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত ‘প্রতিবন্ধী নাতিকে নিয়ে আর কত দিন ভিক্ষা করবেন বিধবা শহর বানু’ শীর্ষক সংবাদটি প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। এ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা এবং জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ইউএনও জাহিদুর রহমানের পরামর্শ অনুসারে দ্রুততম সময়ে অসহায় দাদি-নাতিকে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ইউএনও জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আশা করা যায়, শিগগিরই দাদি-নাতি ভাতার প্রাপ্য টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহর বানুকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তাঁদের থাকার জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে এবং নাতি আসাদুলের জন্য একটি হুইলচেয়ার দেওয়া হবে।
নকলা উপজেলার রামপুর গ্রামের দিনমজুর মো. রুবেলের ছেলে আসাদুল শারীরিক, বাক্ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। আসাদুলের বয়স যখন চার বছর, তখন তার মা রাশেদা বেগম ঢাকার এক বাসায় ছেলেকে রেখে চলে যান। তিনি আর ছেলের খোঁজ করেননি। পরে আসাদুলকে তার দাদি শহর বানুর কাছে রেখে যান বাবা রুবেল। তখন থেকে শহর বানু প্রতিবন্ধী আসাদুলকে কোলে নিয়ে ভিক্ষা করে দুজনের খাবারের ব্যবস্থা করেন। থাকেন একটি জরাজীর্ণ ঘরে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়ে শহর বানু ভিক্ষা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।